১৫ বছরেও শেষ হয়নি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক মামলার বিচার কাজ। ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে মাত্র ৯ জনের। সাক্ষী না পাওয়াকেই মামলায় ধীর গতির প্রধান কারণ বলছে রাষ্ট্রপক্ষ।
প্রতি বছর রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেয় উৎসবপ্রিয় বাঙালি।
পনেরো বছর আগে এমনি এক উৎসবে অতর্কিত বোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ৭ জন। আহত হয়ে পরে মৃত্যু হয় আরো ৩ জনের। আহত হন একশ’র বেশি মানুষ। চাঞ্চল্যকর এ বোমা হামলার তদন্ত থেমে ছিলো দীর্ঘদিন।
ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট হওয়ার পর গতি পায় দু’টি মামলা। পরের বছর ১৬ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে দু’টি মামলারই চার্জগঠন হয়। ২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলার রায় দেওয়া হয়। এতে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। তবে এ মামলাটির চাপে হারিয়ে যায় বিস্ফোরক আইনের মামলা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া জানান, যেহেতু দু’টো মামলার এজাহার, জব্দ তালিকা এবং সাক্ষী একই ছিলো, সেজন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মাজহার হোসেন একসঙ্গে বিচার কাজটি চালানোর জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রেজিস্ট্রার বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ‘কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আদেশের কপিটি আমাদের আদালতে আসেনি।’
দীর্ঘদিন আদেশ না আসার কারণে এর মধ্যে হত্যা মামলটির রায় হয়ে যায় এবং চিঠিটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। গত তারিখে আদালত থেকে কয়েকজন সাক্ষীর সমন এবং ওয়ারেন্ট দেয়া হয়েছিলো বলে জানান এই মহানগর পিপি। কিন্তু সাক্ষী সেখানে না থাকায় ওয়ারেন্ট ফেরত এসেছে। তাই আইনী জটিলতার কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে বলেন তিনি।
হত্যা মামলায় আসামিপক্ষ আপিল করার পর তা এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। আর বিস্ফোরক মামলাটির বিচার চলছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।
মহানগর পিপি বলেন, প্রয়োজনীয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর যুক্তিতর্ক শেষে কিচুদিন পর মামরার নিষ্পত্তি হতে পারে। এতে কয়েক বছরও লাগতে পারে বলে জানান তিনি। দ্রুত বিচার আদালতে ১৩৫ কার্যদিবসে মামলার নিষ্পত্তি করতে হয়। না হলে মামলাটি যে আদালতে করা হয়েছিলো সে আদালতে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলেও জানান আইনজীবী।
ঢাকা মহানগর পিপি জানিয়েছেন, গত বছরের বর্ষবরণ উৎসবে নারীকে লাঞ্ছনার মামলাটি আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত করছে সিআইডি।