চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রমজান মাসে ভেজাল পণ্য রুখতে পুলিশের প্রস্তুতি কতটুকু?

রমজান মাস ও ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীজুড়ে নকল কারখানা এবং ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ি শুরু হয়েছে। কোনোরকম অনুমোদন ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে রীতিমতো কারখানা বানিয়ে ভেজাল খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর উৎপাদন চলছে এবং রাজধানীসহ সারা দেশে বাজারজাতও হচ্ছে।

শুধু রাজধানীতেই ভেজাল পণ্য তৈরির এমন শতাধিক কারখানা চিহ্নিত করেছে র‌্যাব-পুলিশ।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, রমজান ও ঈদকে টার্গেট করে বরাবরই ভেজাল চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে। তাই ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে রমজানের শুরু থেকেই কঠোর অভিযানে নামছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পুরো মাস জুড়েই আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বেশি লাভের আশায় ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান ইথোফেন, কার্বাইড ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে অপরিপক্ক কাঁচা আম পাকিয়ে বাজারজাত করছিল। পরে র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত আটক অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করে ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

তিনি জানান, বিভিন্ন জেলা হতে অপরিপক্ক কাঁচা আম নিয়ে এসে আমের ঝুড়িতে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকারক ইথোফেন, কার্বাইড ও অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান দিয়ে পাকানো হচ্ছিল। এছাড়াও ক্ষতিকারক অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান দিয়ে দ্রবণ তৈরী করে আমের ঝুড়িতে স্প্রে করা হয় যাতে করে আম ২/১ দিনের মধ্যে পুরোপুরি হলুদ রং ধারণের আগেই পেকে যায় যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। অথচ এ সমস্ত রাসায়নিক বোতলের গায়েই লেখা রয়েছে ফল পাকানোর কাজে ব্যবহার নিষিদ্ধ।

বৃহস্পতিবার থেকে ভেজাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানে নামবে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, ভেজাল ও পণ্যের অতিরিক্ত মূল্যের বিরুদ্ধে মাসব্যাপী অভিযানে নামবে ডিএমপি। রাজধানীতে শুক্রবার ব্যতীত সপ্তাহে ছয়দিন অভিযান পরিচালনা করা হবে, আমাদের সঙ্গে বিএসটিআই, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, গোয়েন্দা পুলিশের একটি দলও মাঠে থাকবে।

ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান দিয়ে পাকানো আমগুলো ধ্বংস করছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত

জানা যায়, শুধু রমজানকে সামনে রেখে রাজধানীতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য কারখানা। এসব কারখানায় তৈরি হচ্ছে নকল, মানহীন-অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাংলা সেমাই, লাচ্ছা সেমাই, নুডলস, ঘি, হলুদ, মরিচ, মসলা, বেসন, আটা, ময়দা, ভোজ্য তেল, পাউরুটি, কেক ইত্যাদি।

কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর নানা উপকরণ, রাসায়নিক দ্রব্য ও রাসায়নিক রং মেশানো হচ্ছে এসব পণ্যে।

পুরান ঢাকার চকবাজার, মৌলভীবাজার, বড়কাটরা, সদরঘাট, বাবুবাজার, মিটফোর্ড, রহমতগঞ্জ, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, হাজারীবাগ, কোতোয়ালি, ইসলামবাগ, বংশাল, শ্যামপুর, কদমতলী, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, সূত্রাপুর, পোস্তগোলা, ধোলাইখাল, ফরিদাবাদ, ইসলামপুর, সোয়ারীঘাট, দেবীদাস লেন, কামালবাগ, শহীদনগর, উত্তরার উত্তরখান, দক্ষিণখানে নকল কারখানার ছড়াছড়ি রয়েছে। টঙ্গীসহ রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় ভেজাল পণ্য তৈরির কারখানা রয়েছে।