রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘দেবেন্দ্রনাথ জমিদারি দেখতে পাঠালেন রবীন্দ্রনাথকে এপার বাংলায়। রবীন্দ্রনাথ তৈরির পেছনে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। কৃষকদের কাছে তিনি অনেক প্রিয় হয়ে উঠলেন। নৈশ বিদ্যালয় তৈরি করলেন, স্বাক্ষরতা অর্জনের জন্য। কৃষকের উন্নয়নের জন্য সমবায় প্রথা চালু করলেন।
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একটি বিশেষ বক্তৃতার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আজকে ভিন্ন রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আলোচনা করবো। এই রবীন্দ্রনাথের পেছনে আরেক রবীন্দ্রনাথ রয়েছেন, যিনি বর্তমানে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। কৃষকের বন্ধু রবীন্দ্রনাথ, কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অন্ন যুগিয়ে দেয়। একশো বছর আগে রবীন্দ্রনাথ কৃষকের উন্নয়নের কথা বলেছেন। সুদ ছাড়া কৃষকদের টাকা ধার দিতেন। এশিয়াতে প্রথম কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন নোবেলের অর্থ দিয়ে। ছেলে রবীন্দ্রনাথকে লন্ডনে পাঠান কৃষি বিজ্ঞানে ডিগ্রী অর্জনের জন্য।’
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরও বলেন, ‘বৃক্ষবন্দনা কবিতা লেখেন, গাছ রোপণের জন্য কবিতা লেখেন। এই রবীন্দ্রনাথের এখন খুব দরকার। তুমি কি শুধুই নেবে, কিছু দেবে না? সবকিছুই কী আত্মসাৎ কেন্দ্রিক?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠানকে ভালো চোখে দেখেননি কলকাতার হিন্দু এলিটরা। কার্জন হল ছিল সেক্রেটারিয়েট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছেন রবীন্দ্রনাথ, এটি সঠিক নয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) ডক্টর কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, “নালন্দা, তক্ষশিলা বৌদ্ধবিহার গুলোতে শিক্ষাদান কার্যক্রম ছিলো ইউরোপের পূর্বেও। ভারতবর্ষের জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চার বিষয়গুলো রবীন্দ্রনাথ তুলে ধরেছিলেন।
সকল মতের প্রতি সহাবস্থান হওয়ার শিক্ষা তার জীবন থেকে পাই। তিনি ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা করেই বড় হয়েছেন। ‘শিক্ষার হেরফের’ প্রবন্ধে তিনি বলেন,‘আজকালকার দিনে শিক্ষক, দোকানদার, ছাত্র খরিদ্দার। রবির এই বক্তব্য বর্তমানে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। তিনি আরও বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের সময় প্রায় সকল প্যানেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধের পক্ষে বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাঁচানোর এই শিক্ষা রবীন্দ্রনাথ থেকে নিতে হবে। তিনি শান্তি নিকেতনে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তিনি উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রেখেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে অপপ্রচার ঠিক নয়। তাকে যথাযথ সম্মান দেয়া বাঞ্ছনীয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করলে ১৯২৬ সালে তাকে আমন্ত্রণ করা হতো না।
ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদক মাজহারুল কবির শয়নের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন ডাকসুর সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহদী আল মুহতাসিম নিবিড়, ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক শামস-ই-নোমান ও ডাকসুর সদস্যবৃন্দসহ আরো অনেকে।