চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রক্ত জমাটের সঙ্গে ভ্যাকসিনের সংযোগ খুঁজছে গবেষকরা

বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি সম্ভাবনার অনুসন্ধান করছেন যা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন গ্রহণের পরের কয়েকদিনে বা সপ্তাহে গ্রহীতাদের মস্তিস্কে অত্যন্ত বিরল রক্ত জমাট বাঁধার অন্তত ১৮টি ঘটনাকে ব্যাখ্যা করতে পারবে।

ইউরোপীয় বিশ্লেষকরা একটি তত্ত্ব সামনে এনেছেন যে এই ভ্যাকসিনের ফলে অল্প কিছু ক্ষেত্রে একটি অ্যান্টিবডি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। অন্যরা এখনো বোঝার চেষ্টা করছে যে এর সঙ্গে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা।

কিন্তু অনেক বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই এবং এটি পরিস্কার নয় যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন এমন কোনো কিছু ঘটাতে পারে কিনা বা কেন পারে যেখানে অন্যান্য ভ্যাকসিন দিয়েও করোনাভাইরাসের একই অংশকে টার্গেট করা হয়েছে।

বিরল রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনাটি নারীদের মধ্যেই দেখা গেছে আর তার বেশিরভাগই দেখা গেছে ইউরোপে। দুটি ঘটনা দেখা গেছে ভারতে।

ইউরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) বলেছে,  প্রাথমিক পর্যালোচনা বলছে এই ভ্যাকসিন রক্ত জমাট বাঁধার সামগ্রিক ঝুঁকির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়। তবে এটি সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রোম্বোসিস (সিভিএসটি) হিসাবে পরিচিত মস্তিষ্ক থেকে রক্তবাহী স্থানে রক্ত জমাট বাঁধার বিরল ঘটনাগুলির সাথে সম্পর্ককে অস্বীকার করেনি।

জার্মানি ও নরওয়ের যেসব জায়গায় এসব ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে সেখানকার গবেষকরা এই সপ্তাহে অনুমানে (হাইপোথেসিস) জানিয়েছেন যে, এই ভ্যাকসিনের ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ফলে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় আর তাতেই রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটতে পারে।

নরওয়ের অসলো ইউনিভার্সিটি হসপিটালে তিনজন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে যাদের রক্ত জমাট বেধে গেছিলো। সেখানকার প্রফেসর পল আন্দ্রে হোলমি বলেন, আমরা আবিষ্কার করেছি যেটা আমাদের রোগীদের ক্লিনিকাল অগ্রগতি বিশ্লেষণ করতে পারে।

তবে এসব অনুসন্ধান প্রাথমিক বলেই সতর্কবার্তা দেন হোলমি। বলেন, যেসব গবেষণা হবে এটা কেবল তার শুরু। তার অনুমানকে সমর্থন করে এমন কোনো তথ্যও তিনি দেননি।

জার্মানির গ্রিফসওয়াল্ড ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকের গবেষকদের একটি দলও একই উপসংহারে এসেছেন। তাদের মতে, যদি এটা সঠিক প্রমাণিত হয় তাহলে পরিস্থিতি উন্নয়নের কোনো পথও থাকবে।

ইএমএ’র গবেষকরা বৃহস্পতিবার বলেন, ভ্যাকসিনের সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা নাকি হঠাৎই এমন ঘটছে তা জানার জন্য তারা বেশ কিছু অনুসন্ধান পরিচালনা করছেন।  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কমবয়সী নারীদের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।

তবে সিভিএসটির সঙ্গে গর্ভাবস্থা ও মুখে খাওয়া জন্মনিয়ন্ত্রণের সম্পর্ক আছে।  ইএমএ’র সেফটি কমিটির প্রধান সেবাইন স্ট্রস বলেন, আমরা ভবিষ্যতে যা নিয়ে অনুসন্ধান চালাবো তার একটি এটি।

ইএমএ এটাও অনুসন্ধান করছে যে যাদের রক্ত বাঁধার সমস্যা দেখা দিচ্ছে তারা আগেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা বা যখন ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছিলো তখন আক্রান্ত ছিলেন কিনা।

বিশ্বের ৭০ টি দেশে বর্তমানে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এখনও অনুমোদন পায়নি এই ভ্যাকসিন।