কোন অঘটন ছাড়াই রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি সত্যিই আশার খবর। এই নির্বাচনের আরেকটা ইতিবাচক দিক হলো, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এখানে পরাজিত হলেও সঙ্গে সঙ্গে তারা এই পরাজয় মেনে নিয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিএনপির প্রার্থীও বলেছিলেন, তিনি পরাজিত হলেও গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচন বয়কট করবেন না। পরে অবশ্য তিনি তার কথা রাখতে পারেননি। নিজের পরাজয় বুঝতে পেরে ফল ঘোষণার আগেই বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নির্বাচনে সুক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখান করেন। কিন্তু বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য ছিল ভিন্ন। তার বক্তব্যে গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার লক্ষ্যণীয়। শুক্রবার তিনি বলেছেন: রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ফল সবার গ্রহণ করা উচিৎ। তিনি তার বক্তব্যে উন্নত বিশ্বের রাজনৈতিক সংস্কৃতির উদাহরণ দিয়ে এই ফল গ্রহণের আহ্বান জানান। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ-বিএনপির পরাজয় সম্পর্কে তিনি বলেছেন: এই পরাজয়ের অন্যতম কারণ হতে পারে যে, ক্যান্ডিডেটস আর নট ভেরি সুইটেবল, সব দলেই। জাতীয় পার্টির নির্বাচিত প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা যে রংপুরে অনেক জনপ্রিয় তা আওয়ামী লীগও স্বীকার করেছে। বিষয়টি আওয়ামী লীগ, বিএনপি কিংবা অন্য যেকোন দলের জন্যই সতর্কবার্তা বলে আমরা মনে করি। দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষ যে জনপ্রিয় ব্যক্তিকে চায় এটাই রংপুরে প্রমাণিত। তাই আওয়ামী লীগ, বিএনপির চেয়েও ৯৮ হাজার কিংবা লক্ষাধিক ভোট বেশি পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা নিশ্চয়ই এই দুই দলকে ভাবিয়ে তুলবে বলে আমরা মনে করি। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা এবং দেশ ও জনগণের জন্য রাজনীতির মানসিকতা সম্পন্ন নেতৃত্ব তৈরির দিকে সংশ্লিষ্টদের আরও মনোযোগী হতে আমরা আহ্বান জানাই। এর পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই সংস্কৃতিতে অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করি। রাজনৈতিক দলের নেতারা কি দেশের মানুষকে সেই নিশ্চয়তা দেবেন?