রংপুরে যৌতুকের জন্যে স্বামী-শাশুড়ির দেওয়া আগুনে দগ্ধ তাহমিনার মৃত্যু হয়েছে। তিন দিন অসহ্য যন্ত্রণা ভোগের পর আজ ভোরে তার মৃত্যু হয়। নিহত তাহমিনার পরিবার অবিলম্বে ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে।
দগ্ধ হওয়ার পরও বাঁচতে চেয়েছিলো তাহমিনা। স্বামী-সন্তান নিয়ে যে সুখের সংসারের স্বপ্ন দেখতেন সে স্বপ্ন আগুনে পুড়েই ছাই হয়ে গেলো।
তাহমিনার চাচা আব্দুর রহিম বলেন, কোনো নারীর যেন এ রকম না হয়। এরা যেন কঠিন শাস্তি পায়। সরকারের কাছে আবেদন থাকবে এদের যেন কঠিন শাস্তি নিশ্চিত হয়।
তাহমিনার ভাই গোলাম মোস্তফা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার বোন মরার আগে বলে গেছে, আমার বাচ্চা দুইটাকে কে দেখবে। আমরা তার খুনিদের শাস্তি চাই।
রংপুরের পীরগাছা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বাচ্চার সামনে মায়ের গায়ে আগুন দিয়ে মারার করুণ ঘটনার বিচার হওয়া দরকার।
স্বামী-শ্বাশুড়ির দেওয়া আগুনে অগ্নিদগ্ধ তাহমিনাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ই্উনিট থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের বার্ন ইউনিটে নেয়া হচ্ছিল। পথেই না ফেরার দেশে চলে যায় সে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ও প্লাষ্টিক সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মারুফুল ইসলাম বলেন, আমারা রোগীকে অত্যান্ত খারাপ অবস্থায় পেয়েছি। তারপর এই কয় দিন চিকিৎসার পর তার কিডনী ড্যামেজের দিকে যাচ্ছিল আস্তে আস্তে।
তিনি আরো বলেন, তাকে আরো উন্নত চিকিৎসার ঢাকা বার্ন আইসিইউতে পাঠানোর পথে তার মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পীরগাছা উপজেলার কান্দি গ্রামের গৃহবধু তাহমিনাকে স্বামী আব্দুল মান্নান ও শ্বাশুড়ি আলেমা বেগম গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এতে পুড়ে যায় তার শরীরের ৫০ ভাগ। এমন পাশবিক লোমহর্ষক ঘটনা রুখতে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন সচেতন এলাকাবাসী।