চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যে তিন কারণে শিরোপা জিততে পারে ফ্রান্স

যখন প্রতিটি বাধা অতিক্রম করে এবং ব্যতিক্রমী গুণাবলী দেখিয়ে একটি দল বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে, তখন তারা কাঙ্ক্ষিত ট্রফিটি তুলে ধরার স্বপ্নও দেখে। যারা ফাইনালের জন্য প্রস্তুতি নেয় তারা এটাও বিশ্বাস করে যে, তাদের নাম শীঘ্রই ‘বিশ্বকাপের বিজয়ী’দের তালিকাতে যোগ হতে যাচ্ছে।

রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা দুটি দলের একটি ফ্রান্স। আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে ও বেলজিয়ামে মতো দলকে হারিয়ে ট্রফি জয়ের শেষ যুদ্ধে নামছে ফরাসিরা। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে রোববারের ফাইনালটা তিন কারণে জিততে পারে ফ্রান্স।

সুসংগঠিত দল
ডিফেন্স এবং আক্রমণ উভয় জায়গাতেই টুর্নামেন্টজুড়ে ফরাসিরা ছিল সংগঠিত। পরিসংখ্যানও তাদের হয়ে সেকথা বলছে…

*টুর্নামেন্টের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ফ্রান্স একবারই প্রতিপক্ষের চেয়ে পিছিয়ে ছিল। সেটাও ৯ মিনিটের জন্য (আর্জেন্টিনার বিপক্ষে একসময়ে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল)।

*ব্যাক পজিশনে ৪৮বার বল দখলে জয়ী হয়েছেন ফ্রান্সের মিডফিল্ডার এনগোলো কন্তে। টুর্নামেন্টে এখনো পর্যন্ত যেটা সর্বোচ্চ।

*সবশেষ যে কয়টি ম্যাচে খেলেছেন তার প্রতিটিতেই অন্তত সাতটি করে শট সেভ করেছেন গোলকিপার হুগো লরিস।

*সবশেষ ১১ ম্যাচের আটটিতেই জিতেছে ফ্রান্স (জয়ের হার ৭৩)। বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলের কোচদের মধ্য দিদিয়ের দেশমের জয়ের হারই সবচেয়ে বেশি।

*১৯৫৮ বিশ্বকাপে পেলের পর প্রথম টিনেজার হিসেবে বিশ্বকাপে এক ম্যাচে দুই গোল করেন কাইলিয়ান এমবাপে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ব্রাজিল কিংবদন্তির এই রেকর্ড স্পর্শ করেন ফরাসি তরুণ।

টিম স্পিরিট
ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে বেলজিয়াম কোচ রবার্তো মার্টিনেজ বলেছিলেন, ‘বিশ্বকাপ ট্যালেন্টদের সম্মান করে না। শুধু টিমকে করে।’ দেশমের শিষ্যরা এই একত্রীকরণে বস্তুগত শিক্ষাটা বেশ ভালোভাবেই নিয়েছে।

প্রথমত, ফুটবলীয় বিচারে, দলের প্রায় প্রত্যেকটি খেলোয়াড় চূড়ান্ত পর্যায়ে অবদান রাখতে পারেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল করতে পারেন। নকআউটপর্বের প্রতিটি ম্যাচেই এর প্রমাণ রয়েছে। ওই ম্যাচগুলোতে ডিফেন্ডার, মিডফিল্ডার এবং ফরোয়ার্ড সবাই গোল করেছেন।

দ্বিতীয়ত, মানবিক বিচারে, একটি দলের বেঞ্চে বসে থাকা খেলোয়াড়রাও যে সতীর্থদের সঙ্গে গোলের আনন্দ সমানভাবে উপভোগ করতে পারে তার প্রমাণ দিয়েছে ফ্রান্স দলে। তারা সবাই ব্যক্তিগত জায়গা থেকে একটি ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীতে রূপান্তরিত হয়েছেন। দলের তৃতীয় পছন্দের গোলকিপার থেকে নিরাপত্তা কর্মকর্তা, কোচ, সহকারী কোচ সবাই টিম মিশনের সঙ্গে ১০০% জড়িত। এটা বহু দূরত্ব অতিক্রম করার একটা চিহ্ন।

ইতিহাস
নিজেদের ইতিহাসে প্রথম এবং একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের ২০ বছর পর সেটার পুনরাবৃত্তির জন্য ফরাসিরা মরিয়া। এটাও তাদের জন্য সতর্কতার প্রতীকি যে, ১৯৯৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তাদের কাছে হারের প্রতিশোধ নিতে পারে ক্রোয়েশিয়া।

রোববার ফ্রান্স যদি বিশ্বকাপ জেতে, তাহলে মারিও জাগালো এবং ফ্রেঞ্জ বেকেবাওয়ারের পর দেশম হবেন তৃতীয় ব্যক্তি যিনি খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে এই শিরোপা জিতলেন। এসবকিছুর বিচারে বলা যায়, ২০১৮ বিশ্বকাপটা হতে পারে নীল স্বপ্নের বছর।