রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশ এবং সেসব দেশের বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো রাশিয়ায় তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দিচ্ছে।
টিকটক,অ্যাপল, মাস্টারকার্ড, ভিসা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম ইতিমধ্যেই গুটিয়ে নিয়েছে।
এর আগে অনেক বিতর্কিত ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করে আসা গ্লোবাল কনসাল্টিং ফার্ম ম্যাককিন্সও গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছেন তারা রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেবে।
মার্কিন আইন সংস্থা ক্রোয়েল এন্ড মরিং এর আংশিদার ডিজে ওলফ বলেন প্রথম দিনে কোনও কোম্পানি নিষেধাজ্ঞায় অংশ নেয়নি।রাশিয়ার ইউক্রেনের আগ্রাসনের প্রতিবাদস্বরূপ কোম্পানিগুলো এখন আগ্রসন বিরোধী শিবিরে যোগ দিচ্ছে।
কিন্তু পূর্বে মায়ানমারে হওয়া গণহত্যা এবং চীনের উইঘুরে হওয়া মুসলিমদের হত্যার প্রতিবাদে কোম্পানিগুলো এখনকার মত ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বা তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেনি।
এর কারণ হিসেবে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর কারণ হয়ত পূর্বের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজগুলো পশ্চিমা দেশ গুলো পর্যবেক্ষণ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু বর্তমানে হওয়া রাশিয়ার ইউক্রেন হামলা শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই দেখানো হচ্ছে না বরং ইউরোপের দরজায় যুদ্ধের ঘণ্টা কড়া নাড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ এবং স্নায়ু যুদ্ধের কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছে।
জোসেফ কোরবেল স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনালের অধ্যাপক কুলেন হেন্ড্রিক্স আল জাজিরাকে বলেন, চীনের জিনজিয়াং প্র্রদেশে হওয়া সংকটটি খুব কমই গণমাধ্যমে উঠে এসেছে কারণ সেদেশের সরকার কঠোরভাবে এ বিষয়টি তাদের নজরদারির মধ্যে রেখেছিল। তাই ওই সব অঞ্চলগুলোতে হওয়া নির্যাতনে প্রকৃত চিত্র সকলের সামনে প্রকাশ পায়নি।
এছাড়াও তিনি মনে করেন চীনের অর্থনীতি একটি বড় কারণ হতে পারে। চীনের অর্থনীতি রাশিয়া থেকে দশ গুণ বৃহৎ এর কারণেও চীনকে রাশিয়ার মত এত নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হয়নি।
ইকোনমিস্ট ইন্টিলিজ্যান্স ইউনিটের গ্লোবাল ফরকাস্টিংয়ের পরিচালক অ্যাগাথে ডেমারিস আল জাজিরাকে বলেন, বিভিন্ন কোম্পানি ভবিষ্যতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় জড়িয়ে পড়ার ভয়েও এখন এই পদক্ষেপ নিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় কবলে পড়ার এতটাই ভয়ে আছে যে তারা এখন রাশিয়া থেকে তাদের সকল কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে।