চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

যে কারণে মেলায় আয়কর দিতে আগ্রহ বাড়ছে

মেলা ছাড়া অন্য স্বাভাবিক সময়ে আয়কর দিতে গেলে কাগজপত্রের জটিলতা, ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি, বারবার যাওয়া-আসা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের অসহযোগিতাসহ নানা ধরনের ঝামেলায় পড়তে হয় করদাতাদের।

তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেকেই আয়কর দিতে যান না। কিন্তু আয়কর মেলায় এসব সুবিধা এক জাগায় পাওয়া যায়। এ কারণে মেলায় আয়কর দিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন করদাতারা।

শুক্রবার রাজধানীর রমনায় অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত আয়কর মেলায় আগত কয়েকজন করদাতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

‘সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর’ স্লোগানে এবার রাজধানীতে কর মেলা বসেছে অফিসার্স ক্লাবে। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মেলার উদ্বোধন করেন।

শুক্রবার ছুটিরদিন থাকায় মেলায় আয়কর দিতে এসেছেন সরকারি কর্মচারী হাবিব রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি গত ৬ থেকে ৭ বছর ধরে নিয়মিত আয়কর দিচ্ছি সরকারকে। মেলায় আয়কর দেয়া সহজ। ঝামেলা কম হয়। একসঙ্গে সব সেবা পাওয়া যায়। যেমন ব্যাংক, টাকা জমা দেয়া, ফটোকপি কিংবা যেকেনো প্রয়োজনে কর্মকর্তাদের সহযোগিতা লাগলে পাওয়া যায়। তাই মেলাতে আয়কর দিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি।’

রাজধানীর পল্টন থেকে আয়কর দিতে মেলায় এসেছেন সেলিমুল হক। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে আয়কর দিয়ে আসছি। এ বছরও আমি রিটার্ন জমা দিতে এসেছি। এখানে সবাই সহযোগিতা করে। এনবিআরের পাশাপাশি ব্যাংকের কর্মকর্তারাও বেশ আন্তরিক। এখানে আয়কর দেয়ার বড় সুবিধা হলো এক জাগায় সব সেবা পাওয়া যায়।’

মেলা ছাড়া অন্য সময় কর দিতে গেলে ফরম পূরণের সময় অনেক ঝামেলায় পড়তে হয় উল্লেখ করে রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা রহিম শেখ বলেন, ‘ফরম পূরণে আমরা অনেক কিছুই বুঝি না। যেটা বুঝতে পারছি না, জিজ্ঞাসা করলেই তারা সেটা বলে দিচ্ছেন, সহযোগিতা করছেন। মেলা ছাড়া এই সুবিধা পাওয়া যায় না।’

আয়কর মেলার প্রথম দিনের (১৪ নভেম্বর) তথ্য দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, প্রথমদিন আয়কর আদায় হয়েছে ৩২৩ কোটি ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৫ টাকা। মোট সেবা গ্রহণ করেছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫৮ জন, রিটার্ন দাখিল করেছেন ৬৩ হাজার ২৭২ জন এবং নতুন ই-টিআইএন নিবন্ধন হয়েছে ৪ হাজার ৩৬৬টি।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ৮ বিভাগের ৫৬টি জেলা ৫৬টি উপজেলাসহ মোট ১২০টি জায়গায় আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার মেলার পরিধি গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। ৫২টি আয়কর রিটার্ন বুথ, ৫৩টি হেল্প ডেস্ক, ব্যাংক বুথ (সোনালী ১৩টি, জনতা ৫টি ও বেসিক ব্যাংকের ৪টি), ই-পেমেন্টের জন্য ৩টি, ই-ফাইরিংয়ের জন্য ২টি পৃথক বুথ বসানো হয়েছে। এ ছাড়া মেলায় আগত করদাতাদের তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য একটি মেডিকেল বুথ রয়েছে।

রাজধানী ছাড়াও সব জেলা শহর এবং ৫৬টি উপজেলায় মেলা হচ্ছে। পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে ৫৭টি গ্রোথ সেন্টারে এক দিন ভ্রাম্যমাণ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

মেলায় ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা হয়রানিমুক্তভাবে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। বিভাগীয় শহরে ৭ দিনব্যাপী, জেলা শহরে ৪ দিনব্যাপী, ৪৮ উপজেলায় দুই দিন ও আট উপজেলায় দিনব্যাপী করমেলা চলছে। এবার দেশের ১২০ স্থানে আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই মেলা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মেলায় আয়কর দেয়া যাবে।