এখানে কিন্তু ফেসবুক বা টুইটারের নিউজ ফিডের কথা বলা হচ্ছে না। মনে করে বলতে পারেন শেষ কবে বই হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করেছেন বা কয়েক পৃষ্ঠা পড়েছেন? নিজেকে সুস্থ ও ভালো রাখতে বইয়ের দিকে ঝুঁকতেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বই পড়া শুধু যে আপনাকে মানসিক শক্তি দেয় তাই না বরং মানসিকভাবে সুস্থও করবে।
বই সবসময় আমাদের নতুন এক জগতে নিয়ে যায়। বই-ই পারে আপনার মনোসংযোগ বাড়িয়ে দিতে, পাশাপাশি ভালো ঘুমেও সহায়তা করে বই। বই পড়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন। দেখবেন বই পড়তে আগ্রহ অনুভব করছেন। আর বই পড়ার পর টের পাবেন মানসিকভাবেও বেশ স্বস্তি অনুভব করছেন।
মানসিক উদ্দীপনা: ড্রিম থিয়েটার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জিগ্গি জর্জ মনে করেন, মানুষ যখন বই পড়ে তখন সে তার উন্নয়নটা চোখের সামনে দেখতে পায় না। কিন্তু অনেকটা ভিডিওচিত্রের মতো অনেক কিছুই মানুষের মনে গেঁথে বসে যায়। আর সেটাই তার মনের বিকাশে সহায়তা করে। বেশ কিছু গবেষণা থেকে দেখা যায় নিয়মিত বই পড়লে মানুষ আলঝেইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো মানসিক রোগের হাত থেকে বেশ খানিকটা রক্ষা পায়।
শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে: শুধু সেই সব ক্লাসিক উপন্যাসসমূহই না, যেকোনো বই-ই আপনার শব্দভাণ্ডারকে বেশ সমৃদ্ধ করে। খুব সংক্ষেপে বলতে চাইলে, পড়ুন, পড়ুন এবং পড়ুন। সমৃদ্ধ শব্দভাণ্ডার শুধু যে আপনাকে আপনাকে পেশাগত জীবনে সহায়তা করবে তাই নয় বরং নিজেকে উন্নত করার কাজেও খুবই উপকারি হবে।
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়: বই পড়লে দেখবেন আপনার মনে হবে আপনি অন্য একটি জগতে চলে গেছেন। কর্মক্ষেত্রে খুবই খারাপ একটি দিন কাটানোর পর বা নিজের সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে অনেকটা যুদ্ধ করার পর খানিক সময় বইয়ের রাজ্যে ডুবে যান। বই পড়া শুরু করার মাত্র ছয় মিনিট পরেই ফলাফল দেখতে পেয়েছেন ডাক্তাররা। এই অল্প সময়েই হৃদপিণ্ডের গতি খানিকটা মন্থর হয় এবং দুশ্চিন্তামুক্ত হয় মন।
লক্ষ্য নির্ধারণে সহায়তা করে বই: দৈনন্দিন জীবন বিবেচনা করলে আপনি হয়তো একসঙ্গে অনেক কাজ সারতে পারেন। ইমেইল চেক করা, অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফলো করা, অফিস ও বাসা সামলানো এবং আরো অনেক কাজ একাহাতে করেন আপনি। কিন্তু দীর্ঘ সময়ের কথা চিন্তা করলে, এসবই আপনার প্রোডাক্টিভিটি কমায় এবং এক সময়ে একটি বিষয়ে মনোসংযোগ করার দক্ষতা নষ্ট করে ফেলে। তবে বই পড়তে গেলেই তেমন সব পরিস্থিতির হাত থেকে পুরোই বেরিয়ে আসেন আপনি। বই পড়তে বসলে মানুষ অন্য সবকিছু ভুলে যায় এবং তার পুরো মনোযোগ বইয়ের গল্পটিতে চলে যায়। লক্ষ্য নির্ধারণ আরো সহজ হয় মানুষটির জন্য।
ভালো ঘুমের সহায়ক: প্রতিদিন ঘুমানোর আগে আগে খানিকটা সময়ের জন্য বই পড়ার চেষ্টা করুন। বিছানায় যাওয়ার আগে আপনার সর্বশেষ কাজটা হোক খানিকটা সময় বই পড়া। কয়েকদিনের মধ্যে পার্থক্যটা নিজেই টের পাবেন।