মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া আয়কর মেলায় করদাতাদের জন্য নানা সুবিধার কথা ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)।
প্রতিষ্ঠানটি আগামী দুই বছরের মধ্যে ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর বা ইটিআইএনধারী করদাতার সংখ্যা ৫০ লাখে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করেছে।
এমন তথ্য জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেছেন, এই সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ৩৫ লাখে নিতে চাই।
রোববার বিকালে এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে আয়কর মেলা-২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আয় বাড়ানোর পাশাপাশি করনেট বাড়াতে কাজ করছে এনবিআর।
‘‘এ জন্য বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলাসহ সব কর অফিসের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের থেকেই নতুন করদাতা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।’’
তিনি জানান, নির্বাচনের মাধ্যমে যে সব জনপ্রতিনিধি (ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারসহ) ইতোমধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন তারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করে কি না তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এছাড়াও সিটি কর্পোরেশনগুলোর সাথে করদাতা বাড়াতে আলাপ-আলোচনা চলছে।
বর্তমানে ২০ লাখ করদাতা রিটার্ন দাখিল করেন জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অর্জন’- স্লোগানকে সামনে রেখে এ বছর আয়কর মেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আয়কর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ধারাবাহিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ’।
‘‘এবারের মেলায় কর বিষয়ক সব ধরণের সেবার পাশাপাশি অডিও ভিজ্যুয়াল পদ্ধতিতে করদাতাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে।’’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আয়কর মেলা-২০১৮ আগামী ১৩ নভেম্বর সকাল ৯টায় বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে আয়কর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান এবং এফবিসিসিআইর সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
এবছরও আয়কর মেলার প্রধান স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে। ৭ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ মেলায় করদাতারা ২০১৮-২০১৯ কর বর্ষের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
সহজে রিটার্ন দাখিলের জন্য ঢাকার আয়কর মেলায় প্রতিটি কর অঞ্চলের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। মেলায় রেজিস্ট্রেশন বুথে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান সাপেক্ষে নতুন করদাতাগণ রেজিস্ট্রেশন ও বর্তমান (পুরাতন টিআইএনধারী) করদাতাগণ রি-রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
এছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ই-পেমেন্ট ওয়েব সাইট ব্যবহার করে করদাতারা অনলাইনে প্রদেয় কর পরিশোধ করতে পারবেন। মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য মেলায় আলাদা বুথ থাকবে।
মেলায় স্থাপিত সোনালী ও জনতা ব্যাংকের বুথে করদাতারা আয়কর জমা দিতে পারবেন। মেলায় অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অধীন শুল্ক, ভ্যাট, সঞ্চয় অধিদপ্তর, বিসিএস (কর) একাডেমী, কাস্টমস্ একাডেমী এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আলাদা বুথ থাকবে। যেখান থেকে মেলায় আগত করদাতারা শুল্ক, ভ্যাট, সঞ্চয় অধিদপ্তর এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যেকোনো তথ্য জানা যাবে।
করদাতাদেরকে মেলা প্রাঙ্গনে আয়কর রিটার্ন, ই-টিআইএন আবেদন ফরম এবং চালান ফরম সরবরাহ করা হবে। করদাতাদের সুবিধার্থে মেলায় হেল্পডেস্ক, তথ্য কেন্দ্র ও আয়কর অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত বুথ থাকবে। এসব বুথের মাধ্যমে করদাতাগণকে আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ, চালান ও পে-অর্ডার প্রস্তুতসহ আয়কর আইন বিষয়ক প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে। করদাতাদের সুবিধার জন্য মেলাপ্রাঙ্গনে ফটোকপির ব্যবস্থা থাকবে।