ইসলামী মূল্যবোধ তথা সকল ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে ৫৮টি দলের সমন্বয়ে জোট গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এছাড়া স্বাধীনতার চেতনা এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনবোধ নিশ্চিত করাও এ জোটের অঙ্গীকার বলে জানানো হয়েছে।
রোববারের সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেছেন, এই জোটের দলগুলো নীতিমালা লঙ্ঘন ছাড়া ব্যক্তিগত স্বার্থে জোট ছেড়ে যেতে পারবে না। সেই নীতিমালাগুলো হলো-
নীতিমালা-১
এই জোট বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রেখে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক মুক্তি, ইসলামী মূল্যবোধ তথা অন্যান্য ধর্ম বিশ্বাসীদের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি, আইনের শাসন এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করে একটি আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলাই হবে এই জোটের লক্ষ্য। আমরা নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলবো। কেউ কারো ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করবোনা কিংবা কাউকে তা করতে দেয়া হবেনা।
নীতিমালা-২
সম্মিলিত জাতীয় জোটের অন্তর্ভূক্ত সকল দল ও শরীক জোট সমান মর্যাদা নিয়ে অবস্থান করবে। শরীক দল বা শরীক জোটের চেয়ারম্যান এই জোটের শীর্ষনেতা হিসেবে সম্মানিত হবেন। জোটের চেয়ারম্যান শরীক দল ও শরীক জোটের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শ গ্রহণ করে জোটগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
নীতিমালা-৩
প্রথম পর্যায়ে জোট গঠনের পর অন্য কোনো দল এই জোটে অন্তর্ভূক্ত হবার আগ্রহ প্রকাশ করলে, সেক্ষেত্রে জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সম্মিলিত জোটের অন্তর্ভূক্ত শরীক জোটের সদস্যদলের প্রধান স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য থাকবেন। সম্মিলিত জোটের চেয়ারম্যান সভা ডেকে জোটের গৃহিত সিন্ধান্তসমূহ স্টিয়ারিং কমিটিতে অবহিত করবেন।
নীতিমালা–৪
সম্মিলিত জোটের একটি লিয়াজোঁ কমিটি থাকবে। এই জোটের শরীক দল ও শরীক জোটের মহাসচিববৃন্দ/প্রতিনিধিবৃন্দ নিজ নিজ দল বা জোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জোটের প্রধান মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
নীতিমালা– ৫
জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী মনোনীত করার ক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনার চেয়ে প্রার্থীর যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে। তবে শরীক দল বা শরীক জোটের প্রার্থীতা নিশ্চিত করা হবে। জাতীয় নির্বাচনে জোটের যৌথ ইশতেহার প্রণয়ন করা হবে। শরীক দল বা শরীক জোটের নিজস্ব ইশতেহারও থাকতে পারে। তবে তা সম্মিলিত জোটের ইশতেহারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারবে না।
নীতিমালা– ৬
এই জোটের অন্তর্ভূক্ত সকল রাজনৈতিক দল তাদের নিজ নিজ দলের মত ও আদর্শ নিয়ে তাদের দলীয় কর্মকাণ্ড চালাতে পারবে। তবে জোটগতভাবে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা পালন করতে সবাই বাধ্য থাকবে। জোটের অন্তর্ভূক্ত দলের ক্ষেত্রে যেকোনো নির্বাচনে নিবন্ধিত দলের প্রতীক ব্যবহারের বিষয়টি উন্মুক্ত থাকবে।
নীতিমালা– ৭
এই জোট নির্বাচনী ফলাফল মেনে নেবে। ফল যা-ই হোক না কেনো জোট বহাল থাকবে। জোটের দীর্ঘস্থায়ীত্বের জন্য রাজনৈতিক বিপদে-আপদে, সুদিনে-দুর্দিনে শরীকরা একে-অপরের পাশে থাকবে। আমাদের অঙ্গীকার থাকবে নীতিমালা লঙ্ঘন ব্যাতিত কোনোভাবে স্বার্থের বশবর্তী হয়ে কেউ জোট ছেড়ে যাবে না।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ৫৮টি দল নিয়ে গঠিত ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’র’ ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।
সম্মিলিত জোটের প্রধান শরীক দল হিসেবে রয়েছে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাতীয় ইসলামি মহাজোট এবং বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ)।