ঢামেকের জরুরি বিভাগের সামনে থেকে যেভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ মঞ্চের তিন নেতাকে যেভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন তারা।
যে তিন জনকে তুলে নেওয়া হয় তারা হলেন পরিষদের তিন যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর, মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন এবং ফারুক হোসেন।
দেড়টার দিকে তাদের তুলে নেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর তারা বেলা সোয়া তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
নুরুল হক বলেন: সকালের সংবাদ সম্মেলন শেষ করে আমরা আহত সহযোদ্ধাদের দেখতে এবং দুপুরের খাবার খেতে চাঁনখারপুলে যাওয়ার উদ্দেশ্য রোকেয়া হলের সামনে থেকে রিকশা নিই। রিকশা জরুরি বিভাগের গেটের সামনে পৌঁছলে দুটি মাইক্রোবাস এবং কয়েকটি মোটর সাইকেল আমাদের ঘিরে ফেলে। আমরা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে, কিছু না বলে আমাদের টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তোলা হয়। এরপর গুলিস্তান থেকে গামছা কিনে আমাদের চোখ বাঁধা হয়।
‘আমি ভেবেছিলাম, আমার হয়তো বাঁচা হবে না। তাই ইসলাম ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী দোয়া দরুদ পড়ে নিয়েছিলাম।’
চোখ খোলার পর দেখি আমরা ডিবি কার্যালয়ে। তারা আমাদের বলে “তোমাদের ওপর হামলা হতে পারে এ জন্য তুলে আনা হয়েছে। তোমাদের কিছু ভিডিও দেখানো হবে। কিন্তু আমাদের কোনো ভিডিও দেখানো হয়নি। ঘণ্টাখানেক পর তারা বলে তোমরা চলে যেতে পারো।”
রাশেদের বাবাকে থানায় তুলে নেওয়ার অভিযোগ:
কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন: আমার বাবাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাকে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। এখনও তাকে ছাড়া হয়নি।
‘আমি না হয় আন্দোলন করেছি কিন্তু আমার বাবা কী দোষ করেছে? তাকে কেন তুলে নেওয়া হলো? আমার দিন মজুর বাবা আমাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েই কি অন্যায় করেছে?’
‘আমার বাবাকে নির্যাতন করে স্বীকার করানোর চেষ্টা হচ্ছে যে, তিনি জামায়াত করেন আর আমি শিবির করি’।
সরকারের কাছে নিরাপত্তার দাবি:
পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সকল নেতা এবং তাদের পরিবারকে নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা বলেন: আজকের ঘটনার পর থেকে আমরা প্রচণ্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আমাদের পরিবারের সদস্যরাও। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে একটি প্রতিবাদ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা।