চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যেভাবে অপহৃত শিশু তাওসিফকে উদ্ধার করে পুলিশ

অপহরণকারীরা পুলিশ প্লাজা শপিংমল থেকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে শিশু তাওসিফকে অপহরণ করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপহরণের পর তাওসিফকে তারা মধ্য কুনিপাড়ায় একটি বাসায় আটকে রেখে তার বাবার কাছে দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।

রোববার দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম।

এর আগে শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগ ও গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের গুলশান জোনাল টিম যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত শিশু তাওসিফুর রাহিমকে উদ্ধারসহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীরা হলো- রুবেল রানা, শিপন শেখ ও মো:সাগর।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোমিন আহমেদ তার স্ত্রী নাজমুন আক্তার এবং শিশু তাওসিফুর রাহিম(৬) কে নিয়ে পুলিশ প্লাজায় কেনাকাটা করতে যান।

এসময় হঠাৎ করেই বাবা-মা’র চোখের আড়াল হয়ে যায় তাওসিফ। বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর তাওসিফকে না পেয়ে শপিং মলের পুলিশকে জানান মোহাম্মদ মোমিন আহমেদ। কিছুক্ষণের মধ্যেই গুলশান থানা পুলিশ শপিংমলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানতে পারে এক যুবক শিশুটির সাথে কথা বলছে।

পুলিশ কর্মকর্তা শেখ নাজমুল আলম বলেন: অপহরণের পর শিশু তাওসিফকে অপহরণকারীরা মধ্য কুনিপাড়ায় একটি বাসায় আটকে রাখে। শিশুটি বাবার মোবাইল নম্বর মুখস্থ করে রেখেছিল। তার থেকেই নম্বর পেয়ে অপহরণকারীরা দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাইতে মোমিন আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। শিশুটির মেধা অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারে সহায়তা করেছে।

শেখ নাজমুল আলম বলেন, অপহরণকারীরা শনিবার ভোর চারটার দিকে র‌্যাংগস ফ্লাইওভারের নিচে মুক্তিপণের জন্য আসে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আগে থেকেই ছদ্মবেশে তেজগাঁও-বিজয়সরণি ক্রসিংয়ের আশে পাশে অবস্থান নেন।

পুলিশ প্লাজা শপিং মল। ছবি: আহসান কামরুল

‘তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে অপহরণকারীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গোয়েন্দারা এগিয়ে গেলে একটি প্রাইভেটকার থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলি বর্ষণ করে পালিয়ে যেতে চায় অপহরণকারীরা। পুলিশ নিজেদের আত্মরক্ষার্থে পাঁচ রাউন্ড পিস্তলের গুলি বর্ষণ করে। একপর্যায়ে অপহরণকারী দলের একজন গাড়ী থেকে নিচে পড়ে যায়।’

জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল রানা জানায়, শিশু তাওসিফ হাতিলঝিল সংলগ্ন মধ্য কুনিপাড়ার একটি বাসায় আরও দু’জন অপহরণকারীর হেফাজতে রয়েছে।তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা দল উক্ত বাড়ীতে গিয়ে অপর দুই অপহরণকারীসহ তাওসিফকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।

গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার গোলাম সাকলায়েন অল্পের জন্য গুলিবিদ্ধ না হলেও গুরুতর আহত হন বলেও জানান শেখ নাজমুল আলম।

পুলিশ জানায়: অপহরণকারীরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাদের সাথে আর কারা জড়িত সেটাও খুঁজে বের করা হবে।

গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন: আমরা শিশুটির পরিবারকে আশ্বস্ত করেছিলাম যতক্ষণ শিশুটিকে উদ্ধার করতে না পারবো ততক্ষণ অভিযান চলবে।

শিশু তাওসিফের বাবা মোহাম্মদ মোমিন আহমেদ পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে রোববার সন্তানসহ উপস্থিত হয়ে পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।