চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যুদ্ধ জয়ে যুদ্ধই প্রেরণা!

এক যুদ্ধ জেতার জন্য আরেক যুদ্ধের প্রেরণা। পুরো পরিকল্পনাই অস্ট্রেলিয়া কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের। বিশ্বকাপ খেলার আগে পুরো দলকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি নিয়ে গেছেন তুরস্কে।

কী আছে সেখানে? তুরস্কের গালিপোলি নামে এক জায়গায় রয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি। সেখানে সমাধিস্থ করা হয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ১১ হাজার আত্মউৎসর্গকারীকে। যারা জার্মান নেতৃত্বাধীন অটোমান তুরস্কের সেনাদের হাতে নিহত হয়েছিলেন।

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

সেই মিত্র বাহিনীর আত্মউৎসর্গকারীদের সমাধি দেখিয়েই ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজের আগে ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথদের তাঁতানোর অভিনব পন্থা নিয়েছেন ল্যাঙ্গার।

২০০১ সালে স্টিভ ওয়াহ’র অ্যাশেজ জয়ী দলও এই গালিপোলি ‘তীর্থযাত্রায়’ গিয়েছিল। সেই যাত্রায় না থাকতে পেরে বর্তমান কোচ ল্যাঙ্গার বলেছিলেন, ‘এটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম মর্মযন্ত্রণা।’

অস্ট্রেলিয়ার কোচ হয়ে অবশ্য গত বছরই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আরেকটি স্মৃতিস্থান নর্দান ফ্রান্সে দল নিয়ে গিয়েছিলেন ল্যাঙ্গার।

২০১৫তে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপের আগেও যুদ্ধ থেকে প্রেরণা নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ছিল অজিদের। সেই সিরিজের আগে ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিস্থান ঘুরে আসে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন হলুদ বাহিনী।

তুরস্কের মাটিতে নিজেদের দেশের আত্মউৎসর্গকারীদের সমাধি দেখে আবেগাপ্লুত অজি ক্রিকেটাররা। প্যাট কামিন্স যেমন বলেছেন, ‘আমরা জানি না, এই আত্মউৎসর্গকারী কারা। কিন্তু গালিপোলিতে এদের গল্প প্রেরণা জোগায়। এটা শেখায় যে, কঠিন সময়ে একে অন্যের পাশে থেকে কীভাবে লড়াই করা যায়।’

এতেই শেষ নয়। তুরস্কে নিজেদের দেশের সৈনিকদের লড়াইয়ের কাহিনীও মুগ্ধ করেছে অজি ভাইস ক্যাপ্টেন প্যাট কামিন্সকে। তার কথায়, ‘আমাদের সামনে এখন বিশ্বকাপ। তার আগে তুরস্ক সফরটা খুবই কার্যকর হবে বলে মনে হচ্ছে। চাপের মুহূর্তে লড়াইয়ের প্রেরণা জোগাবে এই সফর।’

অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ থেকে শুরু করে স্মিথ-ওয়ার্নার বা নাথান লায়ন, মিচেল স্টার্ক, সবাই ছিলেন এই প্রেরণার সফরে। ক্রিকেটাররা একসঙ্গে ঘুরেছেন সমুদ্র সৈকতে। আবার পাহাড়ের উপর আলাদা করে স্মিথ, ওয়ার্নারকে নিয়ে বসেছেন ল্যাঙ্গার। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অ্যাডাম জাম্পারাও ছিলেন খোশমেজাজে।

তুরস্কের অভিজ্ঞতা নিয়ে মিশন বিশ্বকাপ শুরু করতে মরিয়া ক্যাঙারু বাহিনী। কামিন্সের ভাষায়, ‘বিশ্বকাপ নিয়ে আমরা পুরো দল খুব উত্তেজিত হয়ে আছি। ইংল্যান্ডে গিয়ে ট্রেনিং করব, কিছু ওয়ার্মআপ ম্যাচও পাবো। আর মাত্র কয়েকসপ্তাহ বাকি। তাই এখন ম্যাচে নামার জন্য সবাই তৈরি হয়ে আছে। সত্যি বলতে, কবে বিশ্বকাপটা শুরু হবে, সেটার জন্যেই আমরা সবাই এখন দিন গুনছি।’

তুরস্কের এই সফর ১৪ জুলাই লর্ডসের ফাইনাল পর্যন্ত অনুপ্রেরণা যোগাবে বলেই বিশ্বাস অজি দলের সবার।

পাঁচবারের বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য এখন একটাই। ছয়বারের মতো কাপ দেশে নিয়ে যাওয়া। তারপর আবার অ্যাশেজ সিরিজ। তবে ল্যাঙ্গার আপাতত বিশ্বকাপের দিকেই ক্রিকেটারদের ফোকাস করতে বলেছেন।

বিশ্বকাপে অজি দলে নজর থাকবে স্মিথ, ওয়ার্নারদের দিকে। এক বছরের নির্বাসন কাটানোর পর বিশ্বকাপের মঞ্চেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন হচ্ছে দুই তারকার। ২২ গজের রণক্ষেত্রে নামার আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আত্মউৎসর্গকারীদের স্মৃতি হয়তো নতুন করে উদ্বুদ্ধ করবে স্মিথ-ওয়ার্নারকে।