৩৫ রাশিয়ান কূটনীতিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্তে দুনিয়াজুড়ে শুরু হওয়া অস্থিরতা আরও বাড়বে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবীর বলেছেন, দুই জায়ান্টের মধ্যে এই টানাপোড়েনের খেসারত দিতে হতে পারে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকেও।
শুরুতে সিরিয়া ইস্যু এবং পরে মার্কিন নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপের কারণে মস্কোর সঙ্গে সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছিলো না ওবামা প্রশাসনের। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ট ট্রাম্পের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ভোটিং পদ্ধতিতে হ্যাকিং করার অভিযোগও আছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে।
সেই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ আর পরে বাকযুদ্ধ এখন রূপ নিয়েছে বৈরিতায়। তারই অংশ হিসেবে ৩৫ রাশিয়ান কূটনীতিককে বহিস্কার করলো যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, মার্কিন-রাশান সম্পর্কে কিছুদিন ধরেই অবনতি আমরা দেখছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যবস্থার পরে রাশিয়াও একটি ব্যবস্থা নিবে। এর মধ্যে একটি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা আমরা লক্ষ্য করছি। এবং মার্কিনীদের মধ্যেকার থাকা অস্থিরতা বা দোদুল্যমানতার মধ্যেই কিন্তু অনেকগুলো ঘটনা ঘটছে।
গতকাল আমরা দেখেছি সিরিয়াতে রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরাক এই তিন দেশ মিলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। এবং আজ থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতি এটা গত ৫০ বা ৭০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম আমরা দেখছি।
এই কূটনীতিক মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এই নতুন দ্বন্দ্ব গোটা বিশ্বের পাশাপাশি প্রভাব ফেলতে পারে বাংলাদেশেও।
হুমায়ুন কবীর বলেন, বাইরের দেশেগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় সেখানে মার্কিন ও রাশিয়ার প্রভাব বলয়ের চেষ্টা আছে সেখানে দেখেন তাহলে দেখতে পাবেন। এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি সামরিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হচ্ছে। তবে মনে রাখতে হবে এটা দ্বিপাক্ষিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা হলেও সেটা সারা পৃথিবীর জন্য কাঁপুনি তৈরি করতে পারে। অনেকেই আশঙ্কার মধ্যে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিবর্তন অন্যান্য দেশকে কিভাবে প্রভাবান্বিত করবে।
আমরা যারা বাংলাদেশের মানুষ আমাদেরও খুব গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে প্রক্রিয়াটা কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সাবেক এই কূটনীতিকের ধারণা, সিরিয়া, আফগানিস্তান আর ইরান ইস্যুতে এখন অনেকটাই দূরে সরে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাতে আরও স্পষ্ট হচ্ছে রাশিয়ার অবস্থান। তার মতে, বিশ্বের এই দুই বড় শক্তির সম্পর্ক যত অস্থির হবে ততটাই ভুগতে হবে বিশ্বকে।