নিরাপত্তা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম এবং নির্বিচারে গ্রেপ্তারসহ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির নানা ত্রুটি তুলে ধরে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রেই বেশী মানবাধিকার লঙ্ঘন আর বিচার বহির্ভূত হত্যা হচ্ছে বলে নানা প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের হাতে গত বছরে প্রায় হাজারখানেক হত্যার তথ্য উপস্থাপনসহ তাদের তুলনায় বাংলাদেশের ‘পুলিশ কম হত্যা করেছে’ দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুলনা করলে, আমাদের পুলিশ কম হত্যা করেছে এবং আমরা অপহরণ বা নির্যাতনকে কোনভাবেই অনুমোদন করি না।
মার্কিন পুলিশের হাতে গত বছরেই প্রায় হাজারজনকে হত্যার ভয়ঙ্কর তথ্য ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা সূত্রে তুলে ধরে জয় আরও লিখেছেন, এটা তাদের জন্য যারা মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা কর্তৃক আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমালোচনাকে অনেক বড় কিছু মনে করছেন। এই হলো বাস্তবতা যে, ২০১৫ সালে মার্কিন পুলিশ তাদের দেশে ৯৮৬ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে।
মার্কিন প্রতিবেদনে বাংলাদেশে নারীর প্রতি বৈষম্য ও নির্যাতনের উল্লেখসহ বাল্যবিয়ে ও জোরপূর্বক বিয়ে এবং ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীগুলোর প্রতি সহিংসতাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘণের বয়ানের বিপরীতে জয় লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নীতিগতভাবে নারী ও শিশুসহ অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার ও অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখাও সমর্থন করে। অবৈধ অভিবাসন হচ্ছে একটি দেওয়ানি লঙ্ঘন, এটি কোন অপরাধমূলক কাজ নয়।
‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্যাতন অনুমোদন করেছে’ মন্তব্য করে তিনি লিখেছেন, অপহরণ ও নিপীড়নের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন গোপন কারাগারগুলোতে মানুষদের আটক রেখেছে যাকে তারা বলে, “অসাধারণ পথদর্শন”। এদের অধিকাংশ হলো সন্দেহভাজন জঙ্গি, কিন্তু এদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিরপরাধ নাগরিক, যাদের বছর খানেকের মাঝে বা তারও বেশি সময় পর ছাড়া হয়।
“এই সময়ের মাঝে তাদের পরিবার জানতে পারেন না যে তাদের অপহরণ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যসহ বেশিরভাগ ইউরোপিয়ান দেশগুলো এই “অসাধারণ পথদর্শন” কার্যক্রমের সাহায্যকারী। এসব ঘটেছে পূর্ববর্তী প্রশাসনের অধীনে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট সম্প্রতি তদন্ত শেষে ঘোষণা করেছে যে এই কাজগুলো ছিলো অবৈধ।”
মানবিকতার এমন উপর নৃশংস আক্রমণের পরও ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের লোকদের অপরাধমূলক কাজের তদন্তের বিষয়টি নাকচ করে এসেছে। কেউই কখনও এই বিষয়ে অভিযুক্ত হবেন না।’ বলেও উল্লেখ করেন জয়।