যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাজ্যে প্রায় ৩০০ ধর্মযাজকের হাতে নির্যাতনের শিকার সহস্রাধিক শিশুর পক্ষাবলম্বন করেছেন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস। ভ্যাটিকান থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়, চার্চ এই ভয়াবহ এই ঘটনার মূলোৎপাটন করতে নির্যাতিতদের বক্তব্য শুনতে চায়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবীরা তথ্য উদঘাটন করেছেন, যে পেনসিলভিয়ায় প্রায় সহস্রাধিক শিশু পাদ্রীদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কনফারেন্স অব ক্যাথলিক বিশপ এই ঘটনায় ভ্যাটিকানের নেতৃত্বে একটি জরুরি তদন্ত দাবি করেছে।
দলটির প্রেসিডেন্ট কার্ডিনাল ড্যানিয়েল দিনার্দো এই ঘটনাকে বিশপশাসিত নেতৃত্বের বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করেন।
পেনসিলভিয়ার গ্র্যান্ড জুড়ির রিপোর্ট বলছে, অন্তত ৩০১ জন পাদ্রী গত ৭০ বছর ধরে শিশুদের নির্যাতন করে যাচ্ছে। রিপোর্টে আরো উঠে আসে, কিছু নির্যাতনকারী স্বয়ং এবং এসব ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া লোকগুলো পরবর্তীকালে চার্চে কোনো বড় পদে আসীন হয়।
১৮ মাস ধরে পরিচালিত ওই তদন্তে উঠে আসে নানান ভয়াবহ পরিস্থিতি। সেখানে তথ্য মেলে:
একজন পাদ্রী নয় বছর বয়সী ছেলেকে নির্যাতনের পরে তার মুখ পবিত্র জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে বাধ্য করে। আরেকটি বালক নির্যাতিত হওয়ার পরে নির্যাতনকারীর কাছে নিজের পাপ স্বীকার করতে বাধ্য হয়।
তিন ছেলেকে নির্যাতনে অভিযুক্ত একজন পাদ্রী চার্চ থেকে ইতিবাচক চাকরির সনদ নিয়ে ডিজনি ওয়ার্ল্ডে কাজ করতে চলে যায়। সাত বছরের এক মেয়ের টনসিলের অপারেশনের পর তাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে নির্যাতন করে আরেক পাদ্রী।
আরেক শিশুকে যিশুর ক্রুশবিদ্ধ করার সময়ের মতো করে নগ্ন হতে বাধ্য করা হয়। ওই অবস্থায় পাদ্রী তার ছবি তোলে। পরে পাদ্রী ওই শিশুকে একটি ক্রুশসহ সোনার চেইন দেন যেন অন্যান্য পাদ্রীরা জানতে পারে যে সে নির্যাতনের শিকার।
আরেক ছেলের উপর ক্রমাগত নির্যাতনের ফলে সে পিঠের ইনজুরিতে পড়ে। ব্যথা কমাতে সে ব্যথানাশক ওষুধে অভ্যস্ত হয়ে যায়। ওভারডোজে একসময় তার মৃত্যু হয়।