বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রের পর যুক্তরাজ্যেও বর্ণবাদী আচরণ করছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্য এবং ওয়েলসে কিছু কিছু বর্ণের মৃত্যুর হার শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে বেশি।
যুক্তরাজ্যে ২ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর প্রাপ্ত তথ্যসূত্র উল্লেখ করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে দেশটির ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস অফিস।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের বয়স, লিঙ্গ, বিশ্লেষণ করে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিক দিয়ে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষাঙ্গ পুরুষদের মৃত্যু ৪.২ গুণ বেশি। আবার শ্বেতাঙ্গ নারীদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের মৃত্যুর সংখ্যা ৪.৩ গুণ বেশি।
রিপোর্টে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত এর জনগণ জাতিগতভাবে শঙ্কর হওয়ার কারণে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি বেশি।
তবে বয়স, সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পুরুষদের মৃত্যুর ঝুঁকি শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে ১.৮ গুণ বেশি। যেখানে নারীদের মৃত্যু ঝুঁকি ১.৬ গুণ।
সামাজিক নিরাপত্তা, বয়স, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি বিবেচনা করলে দেখা যায়, শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ নারী পুরুষের মৃত্যুর ঝুঁকি ১.৯ গুণ হ্রাস পায়।
সমাজে আর্থ-সামাজিক অবস্থানের করণে অন্যান্য সুযোগ সুবিধার কারণে করোনার এরকম জাতিগোষ্ঠীগত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
গত মাসে প্রকাশিত অন্য আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন থেকে উৎপত্তি হলেও করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। আর যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আফ্রো-আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গরা।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, শহরটিতে ৬ হাজার ১শ জন করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি কৃষ্ণাঙ্গ।
শিকাগোর কর্মকর্তারা জানান, শহরটির মোট জনগোষ্ঠীর ৩০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেক এবং মারা যাওয়া প্রায় ৭০ শতাংশই কৃষ্ণাঙ্গ। লুইজিনিয়া রাজ্যেও মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩২ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ। এখানেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ৭০ শতাংশ আফ্রো-আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ জাতি। এছাড়া মিশিগানে মাত্র ১৩ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ বাস করলেও সেখানে করোনায় মারা যাওয়া ৪০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ জাতির।
যুক্তরাষ্ট্রের করোনার এপিসেন্টার হিসেবে পরিচিত নিউ ইয়র্কেও শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যুর হার বেশি।