যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ছয়টি ইউনিটেরই ফলাফল একযোগে প্রকাশ করা হয়েছে।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন এ ফলাফল প্রকাশ করেন। প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তির আবেদন, ফলাফল প্রকাশ ও চয়েস ফর্ম পূরণসহ যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন: দু-একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে ছিল পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইসঙ্গে ইলেক্ট্রনিক বা ব্লুটুথ ডিভাইস শনাক্তে ছিল বিশেষ নিরাপত্তা পরিদর্শক দল। কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে তিনজন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। ছয়টি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এ ছাড়া আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ছয়টি ইউনিটের মধ্যে ‘এ’ ইউনিটের ২৪৫টি আসনের বিপরীতে ১৪ হাজার ১৮৫ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন ৯ হাজার ৭০২ জন। পাশের হার ৯.৯৭ শতাংশ। ‘বি’ ইউনিটের ১৯০টি আসনের বিপরীতে ১২ হাজার ৪০১ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন আট হাজার ৯৯৭ জন। পাশের হার ১৯.৯৮ শতাংশ। ‘সি’ ইউনিটের ২৫৫টি আসনের বিপরীতে ৯ হাজার ২০১ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন ৬ হাজার ৭৫৪ জন। পাশ করেন ৩ হাজার ৬২৩ জন। পাশের হার ৫৩.৬৪ শতাংশ। ‘ডি’ ইউনিটের ৪০টি আসনের বিপরীতে ৩ হাজার ৪৩৫ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। এর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ২ হাজার ১৮৫ জন। পাশ করেন ৬৩ জন। পাশের হার ২.৮৮ শতাংশ। ‘ই’ইউনিটের ২৫টি আসনের বিপরীতে ৯৯২ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। তাদের মধ্যে ৬৮৩ জন উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে পাশ করেন ৩০৫ জন। পাশের হার ৪৪.৬৫ শতাংশ। ‘এফ’ ইউনিটের ১৫৫টি আসনের বিপরীতে ২ হাজার ৯৬৮ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ২ হাজার ৪৪ জন। পাশ করেন ৫২১ জন। পাশের হার ২৫.৪৮ শতাংশ।
ছয়টি ইউনিটে ৯১০ আসনের বিপরীতে মোট ৪৩ হাজার ১৮২ জন আবেদন করেন। তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৩০ হাজার ১৪১ জন। পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ছিল ৬৯.৮০ শতাংশ। গত বছর উপস্থিতির এ হার ছিল ৭২.১২ শতাংশ।
অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রশ্নের যে কোনো ত্রুটি বা বেনিফিট অব ডাউট শিক্ষার্থীদের পক্ষে রেখে ফলাফল মূল্যায়ন করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে কোনো শিক্ষার্থীর যদি সংশয় থাকে বা তার মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন হয়নি বলে মনে করেন, তাহলে ওই পরীক্ষার্থীর আবেদন সাপেক্ষে তার ফলাফল পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা, ভর্তি পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম উন্মুক্ত। এখানে সংশয়ের কিছু নেই।
এ বছর ছয়টি ইউনিটে সাতটি অনুষদের অধীনে ২৬টি বিভাগে মোট ৯১০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। এ আসনগুলো ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী এবং যবিপ্রবিতে কর্মরত শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এ ফলাফল পরবর্তীতে জানানো হবে। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আজ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ‘চয়েস ফর্ম’ পূরণ করতে পারবে। পরবর্তীতে ১ ডিসেম্বর ‘এ’ ইউনিট, ২ ডিসেম্বর ‘বি’ ইউনিট, ৩ ডিসেম্বর ‘সি’ ইউনিট, ৪ ডিসেম্বর ‘ডি’ ও ‘এফ’ ইউনিট এবং ৫ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটে উত্তীর্ণদের মেধা তালিকার ক্রম অনুযায়ী ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
গত ২১ ও ২২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার যবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় তথ্যসমূহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট www.just.edu.bd থেকে জানা যাবে।