যত কাজ থাকুক, যত ব্যস্ততা। প্রসেনিয়ামে এই কাজে উঠতে একবারও ঘাটতি হয়নি। প্রতিটি প্রদর্শনীতে তিনি ছিলেন মঞ্চে। ২০ বছরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় আবার মঞ্চ প্রদর্শনী। ১৯৯৮ সালের ২৭ এদিন প্রথম মহিলা সমিতির মঞ্চে এসেছিলো নাটকটি।
২০১৮ এর একই দিনে চলতি বছরের প্রথম আর প্রদর্শনী হিসেবে সেই মহিলা সমিতিতে ফিরছে এই মঞ্চ প্রযোজনা। ৯৬ তম বার হয়ে। তাতেও থাকছেন তিনি। তিনি অভিনয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত শতাব্দী ওয়াদুদ। নাটকের নাম ‘সার্কাস সার্কাস’।
দেশের অন্যতম মঞ্চনাট্যদল প্রাচ্যনাটের চতুর্থ প্রযোজনা ‘ সার্কাস সার্কাস’। রচনা ও নির্দেশনায় আজাদ আবুল কালাম। সংগীত আয়োজন রাহুল আনন্দ। সেট লাইট মো. সাইফুল ইসলাম এবং পোশাকে তৌফিকুল ইসলাম ইমন।
ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট (আইটিআই) এর ১৯৯৮ এর বাৎসরিক প্রতিবেদনে ‘সার্কাস সার্কাস’ কে নতুন একটি দলের প্রযোজনা হিসেবে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় প্রযোজনা হিসেবে অভিহিত করেছিল। প্রথম প্রদর্শনীর পর প্রযোজনাটি বছরের সেরা প্রযোজনাগুলোর একটি হিসেবে মর্যাদা পায়।
‘দ্য গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নামে একটি সার্কাস দলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে গল্পের শরীর। দলটি তার প্রতিষ্ঠাতার হাত ধরে এক সময় প্রচুর খ্যাতি অর্জন করে। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ধ্বংসাবস্থা থেকে দলকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলেন প্রতিষ্ঠাতার ভাই।
দলটিতে সমস্যার অন্ত নেই। অদক্ষ খেলোয়াড়, সদস্যদের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ ইত্যাদি সমস্যায় জর্জরিত দলটি। ঘটনাক্রমে, সার্কাস দলটি একটি গ্রামে আসে শো করতে। সমস্যা আরও ঘনীভূত হয় যখন ধর্মীয় মৌলবাদের কালো থাবা এসে পড়ে। স্থানীয় ধর্মীয় প্রভাবশালী নেতারা সার্কাস শো বন্ধ করার জন্য হুমকি দেয়। শুধু দলের বাইরে থেকে নয়, ভেতরেও কলহের সূত্রপাত হয়। এমনি এক সময়ে ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা তাদের অন্ধ ঘৃণার ছোবল হানে সার্কাস দলটির ওপর। ‘দ্য গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ এ আগুন দেয়া হয়। লাশ পড়ে তিন খেলোয়াড়ের, ভস্মীভূত হয় সার্কাসের সব পশু।
৯৮ সালের প্রথম শো থেকে আজকের শো, সবগুলোতে অভিনয় করছেন? কয়জন আছেন এরকম?’ প্রশ্নে শতাব্দী ওয়াদুদ বলেন, আমি-রিজভী আর জাহাঙ্গীর ভাই এই তিনজন সবগুলো প্রদর্শনীতেই ছিলাম। আজও আছি। এটা একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা। প্রতিবারই নতুন করে চরিত্র নির্মাণের মত উপলব্ধি হয়। এ বছরই ১০০ হবে আশা করি। যতদিন বাঁচি সার্কাস সার্কাস করার ইচ্ছা পোষণ করি।