এ যেন কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারি। নতুন আরেক কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ স্বীকার করেছেন, ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ম্যাসেঞ্জার বার্তার কনটেন্টগুলোও খুঁটিয়ে দেখতো ফেসবুক।
তার দাবি, বার্তাগুলো প্রতিষ্ঠানটির গাইডলাইন বা কমিউনিটি মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করতেই ফেসবুক সেগুলো পরীক্ষা করে দেখতো।
নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় তীব্র সমালোচনার মুখে ফেসবুক, এরমধ্যেই নতুন এই স্বীকারোক্তি জাকারবার্গের।
মার্কিন গণমাধ্যম ভক্স’র এডিটর এজরা ক্লেইনকে দেয়া এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে জাকারবার্গ ফেসবুকের এই বার্তা স্ক্যানিং করে দেখার নীতি নিশ্চিত করেন।
এই নীতিতে ইতিবাচক দিক থাকলেও ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা সংক্রান্ত উদ্বেগে বাড়িয়ে দিয়েছে।
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করেছিল বলে জানিয়েছে ফেসবুক। এর আগে, জানানো হয়েছিলো পাঁচ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিলো প্রতিষ্ঠানটি।
হাতিয়ে নেয়া এসব তথ্য ২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে প্রভাব বিস্তারের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ, তারা কয়েক বছর ধরে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের কল ও টেক্সট হিস্টোরি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আসছে। যার জন্য সমালোচনার সম্মুখিন সামাজিক মাধ্যমটি।
ভক্স’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে জাকারবার্গ জানান, তার মাউনন্টেন ভিউ-এর ফার্মের একজন স্টাফ ফোন দিয়ে জানিয়েছিল, তাদের সিস্টেম মিয়ানমারে জাতিগত নিধন সংক্রান্ত উত্তেজনাপূর্ণ বার্তা পাঠানোর প্রচেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩৩ বছর বয়সী এই বিলিওনিয়ার জানান, কি ঘটছে তা শনাক্ত করতে পারে আমাদের সিস্টেম।
সামাজিক মাধ্যমে এই তথ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ব্লুমবার্গকে ম্যাসেঞ্জার জানায়, তারা স্ক্যানিং করে পাওয়া বার্তার তথ্যগুলো বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে কাজে লাগায় না। বার্তার অপব্যবহার রোধ করতে ফেসবুকের মতো একই টুল তারাও ব্যবহার করে বলে জানায়।
ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, মেসঞ্জারে যখন তুমি একটি ছবি পাঠাও, তখন আমাদের অটোমেটেড সিস্টেম তা ফটো ম্যাচিং টেকনলোজি ব্যবহার করে স্ক্যান করে দেখে এখানে শিশু নিপীড়ণমূলক কোন ছবি আছে কিনা, বা তুমি যখন কোনো লিঙ্ক পাঠাও, আমরা ম্যালওয়ার বা ভাইরাস এর জন্য তা স্ক্যান করে দেখি।
“আমরা যাতে আমাদের প্ল্যাটফর্মে অবমাননাকর আচরণ দ্রুতই বন্ধ করে দিতে পারি সেজন্যই ফেসবুক এই অটোমেটেড টুলস গুলো ডিজাইন করেছে।”
কিন্তু বর্তমান পরিবেশে তা খুব কমই স্বস্তি দিচ্ছে, যেহেতু গোপনীয়তার বিষয়টি সকল ব্যবহারকারিদের মনেই প্রথমে এসে যাচ্ছে।
কেভিন চ্যাস্টেইন নামের একজন টুইটার ব্যবহারকারী তার এক অভিজ্ঞতা শেয়ার করে দাবি করেছেন ম্যাসেঞ্জার বার্তাগুলো টার্গেট অ্যাডভারটাইজিং এর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি টুইট করেন, একটি বিশেষ জায়গার কথা উল্লেখ করে রাতে ডিনারের জন্য আমি আমার স্ত্রীকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্চারে বার্তা পাঠাই এবং পরে ফেসবুক ওপেন করলে সেই রেস্টুরেন্টের বিজ্ঞাপন দেখি।