ম্যানচেস্টার সিটিকে আবুধাবির একটি সরকারি সংস্থা এক্সিকিউটিভ অ্যাফেয়ার্স অথরিটি (ইএএ) সরাসরি অর্থায়ন করেছে। জার্মান ম্যাগাজিন ডের স্পিগেলের প্রকাশ করা নথিতে তার প্রমাণ মিলেছে। ইউরোপীয় অনুসন্ধানী সহযোগিতা (ইআইসি) নেটওয়ার্কের সঙ্গে নথিগুলো শেয়ার করা হয়েছিল।
নথি অনুসারে, ম্যানসিটির মূল সংস্থাটি আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করে খেলোয়াড়দের এজেন্টকে মিলিয়নেরও বেশি অঙ্কের কমিশন দিয়েছে। একইসঙ্গে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক স্প্যানিশ ফুটবলারকে চুক্তি করার জন্য একটি ত্রিপাক্ষিক নেপথ্যেও ছিল। স্প্যানিশ পত্রিকা ইনফোলাইব্রের প্রকাশিত খবরে এমনই বলা হয়েছে।
এক্সিকিউটিভ অ্যাফেয়ার্স অথরিটি (ইএএ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স, শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে কৌশলগত নীতির বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে।
ইএএ’র আর্থিক কর্মকাণ্ড স্পেন পর্যন্ত গড়িয়েছিল। সেখানে তারা ছদ্মবেশে অর্থ প্রদানের জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে জেমস রাউরসের মালিকানাধীন অডিওভিজ্যুয়াল গ্রুপ মিডিয়াপ্রো ব্যবহার করেছিল।
ইউরোপীয় পেশাদার ফুটবল বিশ্বে আর্থিক লেনদেন প্রকাশকারী অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল লিক্সের তদন্তে বিষয়টি সামনে এসেছে। আবুধাবি ইউনাইটেড গ্রুপ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এডিইউজি) ক্লাবকে যে অর্থ দিয়েছিল, সেটি এক্সিকিউটিভ অ্যাফেয়ার্স অথরিটি অনুমোদন দিয়েছিল।
আমিরাতকে কৌশলগত পরামর্শ দেয়া এডিইউজি অ্যাকাউন্টগুলোও পরিচালনা করে থাকে। অভ্যন্তরীণ নথিগুলো সেটাই ইঙ্গিত করছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান, খালদুন আল মুবারক, আবুধাবির ডি ফ্যাক্টো প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিলের প্রধান এবং ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ারম্যান।
তদন্তের নথি অনুসারে, আল মুবারক সরকারের মাধ্যমে যাওয়া অর্থের প্রবাহ অনুমোদন করেছিলেন এবং সেটি ফুটবল ক্লাবটির অ্যাকাউন্টে গিয়ে শেষ হয়েছিল।
এজেন্টদের কমিশন প্রদানের অনুরোধ এক্সিকিউটিভ অ্যাফেয়ার্স অথরিটির আইনি পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। ম্যানসিটিকে স্পন্সর করা আমিরাতের টেলিকমিউনিকেশন গ্রুপ কোম্পানি ইতিসালাতে একটি চালান পাঠায়। ম্যানসিটির সরকারী সংস্থার অর্থ পরিচালক ওমর আওয়াদের কাছে সেটি পাঠানো হয়।
বিষয়গুলো নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি বা ইএএ কর্মকর্তাদের কেউই ডের স্পিগেলের প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি।
ডের স্পিগেল জানাচ্ছে, তদন্তটি ম্যানসিটির বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগের উপর দৃষ্টিপাত করছে। সেগুলো হল- অপ্রাপ্তবয়স্ক খেলোয়াড়দের উপর নেয়া পদক্ষেপ, সন্দেহজনক স্পন্সরশীপ এবং রবার্তো মানচিনির ক্ষতিপূরণে অন্যায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, অপ্রাপ্তবয়স্ক খেলোয়াড়দের ম্যানসিটির সঙ্গে চুক্তি করার জন্য চাপ দেয়া হয়েছিল। এতে নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে।
ম্যানসিটির স্পন্সরদের সন্দেহ করা হয় যে, তারা ক্লাবকে তাদের অর্থের শুধুমাত্র একটি অংশই দিয়েছে, বাকিসবের বেশিরভাগই স্পষ্টত শেখ মনসুরের কাছ থেকে এসেছে।
ইতালির কোচ মানচিনি ২০০৯-২০১৩ সাল পর্যন্ত ম্যানসিটির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি একটি কাল্পনিক পরামর্শ চুক্তির মাধ্যমে গোপনে নিজের ক্ষতিপূরণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পেয়েছেন বলা হচ্ছে।