ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপ জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার রাতে হোসে মরিনহোর দলকে ২-১ গোলে হারিয়েছে জিনেদিন জিদানের দল। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এবং রিয়ালের ইতিহাসে চতুর্থবার ‘সুপার’ চ্যাম্পিয়ন হল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ক্লাবটি।
মেসিডোনিয়ার স্কোপিয়েতে রিয়ালকে এগিয়ে দেন কাসেমিরো। পরে ইসকোর গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দলটি। আর ম্যানইউর ম্যাচে ফেরার চেষ্টার গোলটি নতুন রিক্রুট রোমেলু লুকাকুর।
এক দল ইউরোপের মৌসুম সেরা পারফর্মার ক্লাবগুলোর সঙ্গে লড়াই করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল, দলটি রিয়াল মাদ্রিদ। আরেক দল সেরাদের সেই আসরে কোয়ালিফাই করতে না পেরে ইউরোপা লিগ খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, দলটি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এই তথ্যই বলে দেয় গত মৌসুমে দুদলের পারফরম্যান্সে বিস্তর তারতম্য থাকলেও কোথায় এসে তাদের মিলিত করেছে সুপার কাপের ফাইনালের প্রতিপক্ষ হিসেবে।
স্কোপিয়েতেও থাকল সেই পারফরম্যান্সের তারতম্য। শুরুটা এলোমেলো হলেও আক্রমণের লাগাম ছিল রিয়ালের পায়েই। অবশ্য ১৬ মিনিটের সময় কাসেমিরোর মাথা ছুঁয়ে আসা বল ক্রসবার দুর্ভাগ্যে কাটা পড়ায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি লস ব্লাঙ্কোসদের।
ম্যাচের ২৪ মিনিটে রিয়ালে এগিয়ে যাওয়া গোলটি আবার কাসেমিরোর থেকেই আসে। কারভাহালের ক্রসে বল পেয়ে জাল খুঁজে নেন এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। পাঁচ মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত। সেসময় গ্যারেথ বেলের গোল কাটা পড়েছে অফসাইডের ফাঁদে।
মধ্যবিরতির পর ফিরে আরও গোছাল ফুটবল উপহার দিতে শুরু করে রিয়াল। সাফল্য আসতেও বেশি সময় লাগেনি। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ইসকো। বেলের সঙ্গে ওয়ান-টু-ওয়ান খেলে দারুণ বোঝাপড়ার ফসল তোলেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।
ডাবল হজমের পর হুশ ফেরে ম্যানইউর। তবে সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে পারছিল না রেড ডেভিলরা। আক্রমণের ধার একটু বাড়িয়ে প্রথমে পল পগবা হেড করে বল তুলে দেন কেইলর নাভাসের গ্লাভসে, পরে শট লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন লুকাকু।
রিয়াল তখনও আক্রমণ চালিয়ে গেছে। ম্যাচের ৬০ মিনিটে পাল্টা আক্রমণের পর বেলের শটে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় সেই ক্রসবার! বেল না পারলেও লুকাকু পেরেছেন। ৬২ মিনিটে ম্যানইউর হয়ে একটি গোল ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলার আভাস দেন। নেমানজা মাতিচের জোরাল শট গোলরক্ষক নাভাসের গ্লাভসে বাধা পেয়ে ফিরলে পরের চেষ্টায় সেটি রিয়ালের জালে জড়িয়ে দেন লুকাকু।
পরে বদলি নামা মার্কাস রাশফোর্ড আতঙ্ক ছড়িয়েছেন রিয়াল রক্ষণে। ৮০ মিনিটের সময় রাশফোর্ডের প্রচেষ্টাতে আরেকদফা দেয়াল হয়ে দাঁড়ান পরীক্ষিত সেনানী নাভাস। পরক্ষণেই মারোয়ান ফেলাইনির হেডও ঠেকান তিনি।
এদিন শিরোপার হাসির সঙ্গে নিজেদের টানা গোলের রেকর্ডটিও আরেকধাপ ওপরে তুলে নিয়েছে রিয়াল। গত মৌসুমে টানা গোলের রেকর্ড ছিল ৬৫ ম্যাচ পর্যন্ত, সেটি ৬৬তে পৌঁছাল।
গোলের ঘটনায় নাম না থাকলেও ম্যাচে আরও একজন ছিলেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। লম্বা ছুটি কাটিয়ে রিয়ালের জার্সিতে ফিরেছেন। তবে খেলতে হয়েছে বদলি হিসেবে। সাইডবেঞ্চ গরম করার অভিজ্ঞতা হয়ত ভুলেই গিয়েছিলেন সিআর সেভেন। সেই ২০১৫ সালের জানুয়ারির পর প্রথমবার বেঞ্চে পা দোলাতে দেখা গেল রোনালদোকে। শেষদিকে বদলি নেমে কিছুক্ষণ ইতিউতি ছুঁটলেন। সেটি অবশ্য ম্যাচের ফলে কোনও পরিবর্তন আনল না।