হোম অব ক্রিকেটে এক ইনিংস ও ৮ রানের হারে টেস্ট সিরিজ শেষ করল মুমিনুল হকের দল। বাংলাদেশের আরেকটি হতাশার ব্যাটিংয়ের আগে চট্টগ্রামে ৮ উইকেটে জিতে এগিয়ে ছিল পাকিস্তান।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে বাংলাদেশের শুরুটা হল টানা দুই হারে। একদিন পরেই আরও দুটি টেস্ট খেলতে নিউজিল্যান্ডগামী বিমানে চাপবেন মুশফিক-মুমিনুলরা।
বুধবার দিনের খেলা বাকি ছিল আর পাঁচটা মাত্র ওভার। কাটিয়ে দিতে পারলে একটা ড্র অন্তত মিলত। টানা দুদিনের খেলা বৃষ্টির পেটে যাওয়া টেস্টে শেষদিনের দৃঢ়তাটুকুও দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে অল আউট ২০৫ রানে।
পঞ্চম দিনের সকালে শুরু হয় ইনিংস হার এড়ানোর লড়াই। টপঅর্ডারের ব্যর্থতার পর মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ভরসা দিচ্ছিলেন। তাদের ৪৯ রানের জুটি ভাঙলে ম্যাচে ঝুলে যায় পাকিস্তানের দিকে।
মিরাজকে নিয়ে সাকিব আরও খানিকটা চেষ্টা করেছিলেন। তাদের ৫১ রানের জুটি ভাঙলে শুধু সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়ায় হার। সেটির শেষভাগের খেলার ৫ ওভার ২ বল বাকি থাকতে শেষটা টানে বাবর আজমের দল।
শের-ই-বাংলায় পাকিস্তান ৪ উইকেটে ৩০০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। জবাবে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হয় মাত্র ৮৭ রানে। ফলো-অনে পড়া স্বাগতিকরা ২১৩ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে।
সেই শুরুও হয় টপঅর্ডারের আরেকটি বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। ২৫ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেট জুটিতে মুশফিকের সঙ্গে দারুণ ব্যাট করছিলেন লিটন দাস।
দলের রান তিনঅঙ্ক ছোঁয়ার খুব কাছে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন লিটন। ভাঙে ৭৩ রানের জুটি। লিটনের ব্যাটে আসে ৪৫ রান। ৮১ বলের ইনিংসে মারেন সাতটি চার।
তারপর মুশফিক-সাকিব, সাকিব-মিরাজ জুটির লড়াইয়ের চেষ্টা। কোনটাই হালে পানি পেল না। মুশফিক আউট হন ৪৫ রানে। সাকিব করে যান ৬৩। মিরাজ ৭০ বল টিকে থাকেন, ফেরেন ১৪ রানে।
শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে সাকিব নেমে হাসান আলির ওভারে টানা তিনটি চার মারেন। মেজাজটা বুঝিয়ে দেন। ফিফটিও পেলেন। কেবল ম্যাচ বাঁচিয়ে আসতে পারেননি।
অবশ্য ৪ হাজার টেস্ট রানে পা রেখে ফিরেছেন সাকিব। বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে চার হাজারি ক্লাবে ঢুকলেন। ঢাকা টেস্টে নামার আগে ৬৭ রান দূরে ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৩৩ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩।
সাকিবের আগে ৪ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। মি. ডিপেন্ডেবল ৫ হাজার রানের খুব কাছে আছেন। তার সংগ্রহ ৪,৮৫৬।
টেস্ট ইতিহাসে অলরাউন্ডার হিসেবে সাকিবের ৪ হাজার রান ও দুইশর বেশি উইকেটের মালিক হওয়া সবচেয়ে দ্রুততমের রেকর্ড। লেগেছে মাত্র ৫৯ টেস্ট।
পাকিস্তানের জয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সেরা অফস্পিনার সাজিদ খান, নিয়েছেন ৪ উইকেট। প্রথম ইনিংসে তিনি ৮ উইকেট জমিয়েছিলেন নামের পাশে। বাকিদের মধ্যে শাহিন আফ্রিদি ও হাসান আলি ২টি করে, বাবর আজম নিয়েছেন ১ উইকেট।
৩৭তম টেস্ট, ৮৩ ওয়ানডে, ৭০ টি-টুয়েন্টি, অবশেষে বাবর আজমের মনে হল বল করার ম্যাচ এটাই। প্রথম ইনিংসে ১ ওভারের পর দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন ২ ওভার। তাতেই কাজের কাজটা করেছেন। মিরাজকে এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশের টেল তথা বোলারদের উইকেটে আসার পথ উন্মুক্ত করে দেন পাকিস্তান অধিনায়ক।