চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মোদিকে বললাম, উই আর ফাইন

রোববারের সকাল পৌনে ৯টা। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এলেন পুরনো ঢাকায় অবস্থিত ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে। অত্যন্ত সাদামাটা পোশাকে ছিলেন মোদি। দূর থেকে দেখা যে মোদিকে আমরা চিনতাম, সামনাসামনি দেখায় তার চেয়ে অনেক সাধারণ মনে হলেও ব্যক্তিত্বে তিনি অসাধারণ।

তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর, কিছু কথার সময় মনেই হয় নি এতো বড় রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী তিনি। মুখোমুখি দেখা আর কথায় অত্যন্ত প্রাণখোলা জনমানুষের এক প্রতিনিধিই মনে হয়েছে।

মোদি মন্দিরে প্রবেশ করেই সোজা চলে যান মন্দিরের পূজোর ঘরে। মন্দিরে যাওয়ার সব নিয়ম মেনে জুতা খুলে খালি পায়েই প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে তিনি পূজো-অর্চনা সেরে আসেন প্রায় ঘন্টাখানেক আগে থেকে অপেক্ষমান সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠনের ৩৭ জন প্রতিনিধির সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে। প্রতিনিধিদলে আমার থাকার সৌভাগ্যও হয়েছিলো।

মন্দিরে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন। কুশল বিনিময়ের আগে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের রেপ্লিকা মোদির হাতে তুলে দেন ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিক। উত্তরীয় পরিয়ে দেন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সি আর দত্ত।

এরপর একে একে সবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমার সামনে নরেন্দ্র মোদি। সকাল থেকেই ভেতরে ভেতরে একটা উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। মন্দিরে যাওয়ার এসবি পাসতো গতকালই পেয়েছি। কিন্তু মন্দিরে গিয়ে কি মোদির কাছাকাছি যেতে পারবো?

অবশেষে সেই ক্ষণটি যখন এলো কি বলবো মোদিকে ভাবছিলাম তখন। নাম বলে পরিচয় দিলাম বেদান্ত সাংস্কৃতিক মঞ্চের উপদেষ্টা হিসেবে। পাশাপাশি জানালাম, টিভি জার্নালিস্ট; চ্যানেল আইয়ে কাজ করি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলেন, ‘হাউ আর ইউ? হাউ আর ইউ পিপল’। প্রশ্নটার গভীরতা বুঝে উত্তর দিলাম ‘উই আর ফাইন’।

মন্দিরে ছিলো কঠোর নিরাপত্তা। তারপরও ছিলো না কোনো বাড়াবাড়ি। রিপোর্টিং জীবনে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তার নামে যে বাড়াবাড়ির অভিজ্ঞতা রয়েছে, মোদির মন্দির পরিদর্শনে ছিলো তার উল্টো চিত্র।

আমি যে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ অনুষ্ঠানে ছিলাম সেই সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক কিশোর সরকার, সাধারণ সম্পাদক বিনয় জয়ধর এবং সংগঠনের উপদেষ্টা পান্নালাল দত্তও ছিলেন জাতীয় মন্দিরে। ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা।

নেপালে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. নিম চন্দ্র ভৌমিকও ছিলেন সেখানে। এছাড়াও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের মধ্যে কাজল দেব নাথ, নারায়ণ সাহা মনি এবং রানা দাশগুপ্তসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশিষ্টজনেরা শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে।