শাস্তি হয়ে গেল। খেলতে পারলেন না। নানা জনের থেকে নানা রকম প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করল। যার সবটাই ফিফার সমালোচনা করে। সেটাই স্বাভাবিক, লিওনেল মেসি মাঠে এমনই একজন ফুটবলার আর তার ক্যারিয়ারজুড়ে গড়ে ওঠা ভাবমূর্তি এতটাই স্বচ্ছ যে- আর্জেন্টাইন তারকার সমালোচনা করতেও দুবার ভাবতে হয়। এরপরও শাস্তির মাত্রটা বড় রকমের হওয়ায় ফিসফাস চলছিল, আসলে কি বলেছিলেন মেসি?
এমন প্রশ্নের মুখে যার কাছে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য উত্তরটা মিলবে সেই মেসির ধরাই যে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে মুখ খুললেন মেসি স্বয়ং। সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটাতে এগিয়ে এলেন। মেসির ভাষ্য, তিনি সহকারী রেফারিকে কোন গালিই দেননি। ক্ষুব্ধ হয়ে কেবলমাত্র মনে মনে নিজের হতাশা প্রকাশ করেছিলেন।
আর্জেন্টিনার অধিনায়ক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমি যা বলেছি তা কখনোই লাইন্সম্যানকে উদ্দেশ্য করে ছিল না। আমি কেবল মনে মনে নিজের হতাশা প্রকাশ করেছিলাম।’
ফিফা বলছে, গত বৃহস্পতিবার চিলির সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সহকারী রেফারিকে স্প্যানিশ ভাষায় কুৎসিত গালি দিয়েছিলেন মেসি। যদিও ম্যাচের প্রধান রেফারি সান্দ্রো রিচ্চির প্রতিবেদনে মেসির এই গালাগালির কথা লেখা ছিল না। পরে ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে দোষী বলা হচ্ছে।
যার জেরে চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি মিলেছে। বলিভিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনার ম্যাচের ঘণ্টা ছয়েক আগে মেসিকে এই নিষেধাজ্ঞার খড়গে ফেলে ফিফা।
মেসিকে দেওয়া ফিফার নিষেধাজ্ঞাটা নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। কেউ বলছেন, এটা লঘু পাপে গুরু দণ্ড হয়ে গেছে। কারও মতে, ম্যাচের ঘণ্টা ছয়েক আগে কোন দলের সেরা খেলোয়াড়কে নিষিদ্ধ করে দেওয়া অন্যায়।
অফিসিয়াল বিবৃতিতে বার্সেলোনাও তাদের সেরা ফুটবলার মেসির পাশে দাঁড়িয়েছে। ফিফার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কাতালান ক্লাবটি। মেসির শাস্তি নিয়ে সমালোচনা করেছেন দুই বার্সা সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ ও জেরার্ড পিকে।
উরুগুয়ে তারকা বলেছেন, ‘মেসিকে অযথাই অতিরিক্ত সাজা দেওয়া হচ্ছে।’ স্প্যানিশ ও বার্সা ডিফেন্ডার পিকে বলেন, ‘আমি ফিফার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করতে চাই না। তবে মেসিকে দেওয়া চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা মোটেও যথার্থ নয়। আমার কাছে এটা বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে।’
আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান মার্সেলো তিনেল্লি জানিয়েছেন, তারা নিজেদের অধিনায়কের শাস্তির বিষয়ে আপিল করবে। শাস্তি কমানোর জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালাবে।
মেসির শাস্তি নিয়ে ফিফার সমালোচনা করেছেন বিশ্বকাপজয়ী সাবেক আর্জেন্টিনা কোচ সিজার লুইস মোনাত্তিও। সকলের সুর একই। ফিফার পদক্ষেপ যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ।