এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় মোট ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার পাঁচ কোটি ১০ লাখ টাকা বেশি বিক্রি হয়েছে। এ বছর নতুন বই এসেছে চার হাজার ৫৯১টি।
‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮’-এর সদস্য-সচিব ড. জালাল আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মেলার শেষদিন ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে স্বাগত ভাষণ প্রদান করতে গিয়ে একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান দাবি করেন, ‘এবারের মেলা সার্বিক অর্থেই সুন্দর একটি মেলা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক জাগরণ যে বেগবান হচ্ছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।’
এসময় প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮’-এর সদস্য-সচিব ড. জালাল আহমেদ। প্রতিবেদন উপস্থাপন করে তিনি বলেন: ২৭শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলা একাডেমি মোট ১ কোটি ৫১ লাখ ২৪ হাজার টাকার বই বিক্রি করেছে। ২৭শে ফেব্রুয়ারি ২০১৮ পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং আজকের সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করলে বলা যায় যে, এবার বইমেলায় মোট ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
লেখক-প্রকাশকরা বলছেন: খালেদা জিয়ার রায় ছাড়া এ বছর মেলা চলাকালীন তেমন কোন রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় মেলায় দর্শনার্থী সমাগম ও বই বিক্রি বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া বইমেলায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও সন্তোষ জানিয়েছেন তারা।
আয়োজকরা জানান: পুরনো লেখকদের পাশাপাশি এবারের বইমেলায় ছিল নতুন লেখকদের জয়জয়কার। অবশ্য অনেক নতুন লেখকের বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে।
গত কয়েকবছর ধরে দেখা যাচ্ছে পাঠকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মেলায় আসছেন। বিশেষত শিশুদের নিয়ে। সরকারী ছুটির দিনগুলোসহ ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি পহেলা বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে তরুণদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
মেলায় অংশগ্রহণ করা দেশ পাবলিকেশন্স-এর প্রকাশক অচিন্ত্য চয়ন সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বলেন: নতুন-পুরাতন মিলিয়ে এবারের বইমেলায় ভালো বই বিক্রি হয়েছে। গল্প উপন্যাসে চাহিদা বেশি ছিল পাঠকদের।
এবছর মেলায় নতুন বই প্রকাশে শীর্ষে ছিল কবিতার বই। কবিতার বই এসেছে এক হাজার ৩৯৫টি। এরপরই রয়েছে ছোট গল্পের বই ৬৫৫টি, উপন্যাস প্রকাশিত হয় ৬১২টি। এছাড়া মেলায় ২৪৮টি প্রবন্ধ, ৭৯টি বিজ্ঞান, ১০৫টি ছড়ার বই, ১০৮টি ইতিহাস, ১১৮টি শিশুতোষ এবং ৩৯৩টি অন্যান্য বিষয়ের নতুন বই এসেছিল।
সফলভাবে বইমেলা শেষ হওয়ায় লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলা একাডেমি।