১. সামনে ক্যামেরা অথবা দর্শক। হাসিমুখে স্টেজভীতি কাটিয়ে অনর্গল কথা বলে যাওয়ার যোগ্যতা অনেকেরই আছে। উপস্থিত বক্তৃতায় চমকে দেয়ার মতো অনেক ক্যাডেটকেই পেয়েছি লাইফে। তবে তারা কেউ ক্যামেরার সামনে লাইভ দিতে আগ্রহী নয়। কারণ এর চেয়ে ব্যাংকের ক্যাশে বসে অন্যের টাকা গোনাটাকেই এরা অনেক সিকিউরড জব মনে করে।
২. ইতিহাস এমন কোনও সাক্ষ্য দেয় না যে, সাংবাদিকতা একটি লোভনীয় পেশা। শিক্ষকতার মতো মহৎ পেশা হিসেবে অবশ্য এর যে গ্রহণযোগ্যতা, সেটাও অতীত। ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অহমে যেভাবে ভাগ বসিয়েছে বিবিএ-এমবিএ, জার্নালিজমের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। মিডিয়ার চমকও আসলে একটা মিডলক্লাস সেনসেশন। দর্শকের বাসায় আশিটা টিভি চ্যানেল, এর মধ্যে একটায় এক মেধাবী রিপোর্টার পিটিসি দিচ্ছে– আগাম সংবাদ ছাড়া তা পরিবারের লোকজনও মিস করবে।
৩. ফুলে মধু না থাকলে মৌমাছি আসে না।
৪. লবঙ্গ-দারচিনিতে যেমন বদলে যায় চায়ের স্বাদ; টিভি মিডিয়ার ফিল্মি গ্লামারে তেমন বদলে যায় জার্নালিজমও।
৫. আবেগ একটা ফ্যাক্টর। সাংবাদিকতা একটি আবেগ নিরপেক্ষ পেশা, তবে দীর্ঘদিন পেশাটা জড়িয়ে থাকতে আবেগ আবশ্যক।
৬. মিনারেল ওয়াটারের প্লাস্টিক বোতল সামনে রেখেই চলছে বিশ্ব পানি দিবসের সেমিনার। কাভার করতে গিয়ে রিপোর্টার নিজের ইনসার্টটাকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। এক আশ্চর্য হীনমন্যতার কারণে আমিত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না।
৭. নব্বই দশকেই মিডিয়া জার্নালিস্টদের হাতছাড়া হতে থাকে, ক্যাপিটালিস্টদের তালুবন্দি হয়ে পড়ে। যখন সংবাদপত্র মালিকই সম্পাদক বনে যান, তখন পেশাদার সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এটাই স্বাভাবিক। আরেকটা কথা না বললেই নয়, প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার কনসেপ্ট থেকে অনেক মেধাবী কবি-সাহিত্যিকও সাংবাদিকতাকে এড়িয়ে চলেন।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)