‘মেকআপ ছাড়া একজন নারী অনেকটা লবণ ছাড়া খাবারের মতো।’ যুগ যুগ ধরে চলে আসা মেকআপ ও প্রসাধনী নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন দার্শনিক প্লেটো। ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যাবে প্রাচীন মিশরীয় যুগ থেকে শুরু করে এলিজাবেথের সময়কাল, প্রতিটি ধাপেই নারী বিভিন্ন প্রসাধনী দিয়ে সেজে নিজেদের আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করেছেন।
শেকসপিয়ার নারীদের মেকআপ নিয়ে খুব একটা আগ্রহী না থাকলেও তার ঐতিহাসিক হেমলেট নাটকে বলেছেন, “আমি তোমাদের নারীদের বিষয়ে সব শুনেছি এবং তোমাদের প্রসাধনী সম্পর্কেও জেনেছি। সৃষ্টিকর্তা তোমাদের একটি চেহারা দিয়েছেন। আর তার ওপর তোমরা আরেকটি চেহারা নিজেরা তৈরি করো…”
তাহলে কি শুধু নিজেকে যৌন আবেদনময়ী করে তুলতে, চেহারার কোনো দুর্বলতা ঢাকতে নারীরা মেকআপ করেন?
নারীদের এই প্রশ্ন করার পর তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের উত্তর। কেউ কেউ বলেছেন, মেকআপের মাধ্যমে তারা সব কাজে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন। মেকআপ ছাড়া নিজেদের অপূর্ণ মনে হয়।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, কোন মেকআপে দেখতে কেমন লাগে তা নিয়ে পরীক্ষা করতে তাদের ভালো লাগে। মেকআপের রং নিজেদের উচ্ছ্বাস ও মনের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে। এটি এক ধরণের মজা।
২০ বছর ধরে মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করার পর ‘ফেস পেইন্ট: দ্য স্টোরি অব মেকআপ’ এর লেখক লিসা এল্ডরিজ বলেছেন, আমি দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি একজন নারী শুধু নিজের জন্য মেকআপ করেন।
লিসা আরো বলেন, একজন নারীর জীবনে একেক ধরণের মেকআপ একেক ধরণের ভূমিকা পালন করে। নারীদের জীবনে আত্মবিশ্বাস তৈরিতে মেকআপের একটি ব্রাশ একজন ভালোবাসার মানুষের মতো কাজ করে থাকে।
‘মেকআপ একজন নারীকে মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তোলে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সামলাতেও তাকে সাহায্য করে।’
বেশিরভাগ নারী নিজেদের জন্য মেকআপ করলেও কিছু কিছু নারী আছেন যারা মনে করেন, মেকআপ ছাড়া তারা কারো কাছে গ্রহণীয় হবেন না।
গত বছর বেঙ্গর ও অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, জটিল মানুষ ও ঝামেলার মুখোমুখি হওয়ার আগে মনের যে অবস্থা থাকে তা গোপন করার জন্য নারীরা মেকআপ করে থাকেন। এই মেকআপ নারীদের একটি অস্ত্র।
গবেষণায় আরো দেখা যায়, পুরুষ ও নারীরা মনে করেন, যে নারীরা খুব বেশি নয় বরং হালকা মেকআপ করেন, তারা সব থেকে বেশি আকর্ষণীয় হয়।