মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন করেছেন।
রোববার দুপুরে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিভিউ আবেদন করা হয়েছে বলে চ্যানেল আই অনলাইকে জানিয়েছেন এটিএম আজহারুল ইসলামের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। মোট ২৩ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ১৪টি যুক্তি দেখিয়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়েছে বলেও জানান এই আইনজীবী।
এর আগে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আজহারুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় গত ৩১ অক্টোবর বহাল রাখেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। যেখানে ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে বিরুদ্ধে আজহারুলের করা আপিল আংশিক মঞ্জুর করে রায় দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রংপুর জেলা আলবদর বাহিনীর কমান্ডার আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশের পাশাপাশি ৩০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২৫৬ জনকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শত শত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে।
এরপর ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহারুল। পরে ২০১৯ সালের ১৮ জুন আজহারুলের আপিল শুনানি শুরু হয়ে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে গত ৩১ অক্টোবর আপিলের রায় ঘোষণা করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
১৯৬৮ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে পরের বছর আজহারুল ইসলাম ভর্তি হন রংপুর কারামাইকেল কলেজে। একত্তরে বাঙালিরা যখন মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে আজহার তখন জামায়াতের সেই সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি হিসাবে আলবদর বাহিনীর রংপুর শাখার কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। জামায়াতের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করা আজহারুল ১৯৯১ সালে ঢাকা মহানগরের আমিরের দায়িত্ব পান এবং ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হন।