সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম নামাজে জানাজা গুলশানের আজাদ মসজিদে সম্পন্ন হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় এ নামাজে জানাজায় মানুষের ঢল নামে।
জানাজার পর সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। তবে, জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার নামাজ বাতিল করা হয়েছে।
আজ সন্ধ্যায় তার মরদেহ সিলেটে নেওয়া হবে। রোববার সিলেটে বাদ জোহর আরেক দফা নামাজে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
৮৮ বছর বয়সে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী সাবেক অর্থমন্ত্রীর চির বিদায়ে শোকগ্রস্ত পুরো জাতি। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন আবুল মাল আব্দুল মুহিত, ছিলেন একজন সফল অর্থমন্ত্রী। দেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ১২ বছর। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১০ বছর অর্থমন্ত্রী হিসেবে অবসরে যান চৌকষ ও সদা হাসিমুখের এই রাজনীতিবিদ।
বার্ধক্যজনিত কিছু অসুস্থতা ছিলো তার, শুক্রবার সকালে রাজধানীর নিজ বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অবস্থার অবনতি হলে রাতে তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় মুহিতের।
আবুল মাল আব্দুল মুহিতের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৫শে জানুয়ারি। অত্যন্ত মেধাবী হিসেবে বেড়ে ওঠা, কৈশোরকাল সবই কেটেছে পূণ্যভূমি সিলেটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ১ম শ্রেণিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর মুহিত আজীবন দায়বদ্ধ থেকেছেন দেশের প্রতি।
১৯৫৬ সালে আবুল মাল আব্দুল মুহিত পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়ে ওয়াশিংটন দূতাবাসে পাকিস্তানের কূটনীতিক হন। তবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মুহিত।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ফিরে তিনি পরিকল্পনা সচিব হন। এরপর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব এবং এরশাদের শাসনামলে দুই বছর অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি ও অর্থনীতিসহ নানা বিষয়ে আবুল মাল আব্দুল মুহিত বই লিখেছেন ৪০টি।