ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়া মুখ পুড়িয়েছেন মন্তব্য করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা। বিএনপি নেতাদের একাংশের মতামতের বরাত দিয়ে তারা এ প্রতিবেদন তৈরি করে।
এতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া নিজে উদ্যোগী হয়েই মোদির সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকের কারণেই তিনি এখন সবার আলাপ-আলোচনার বস্তু।
গত সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এখন কার্যত অপ্রাসঙ্গিক বিএনপি; এমন মন্তব্য করে প্রতিবেদনে বলা হয়, সংসদে এখন বিএনপির কোনো প্রতিনিধি না থাকায় বাংলাদেশ সফরে আসা বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে বিএনপি এবং দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার কূটনৈতিক গুরুত্ব তলানিতে ঠেকেছে।
ফলে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অসহায় অবস্থাটিই যেন আরো প্রকট আকারে সবার নজরে এসেছে বলে মন্তব্য করা হয়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রটোকল মেনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে খালেদার আগে সময় পেয়েছিলেন জাতীয় পার্টির নেত্রী রওশন এরশাদ, জাসদ-এর হাসানুল হক ইনু এবং ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন। সরকারের শরিক হিসেবে সংসদে তাদের বেশ কয়েজন প্রতিনিধি থাকায় মোদির সঙ্গে দেখা করতে অগ্রাধিকার পেয়েছেন তারা।
এর ফলে খালেদাকে বসিয়ে রেখে তার সামনেই ডাক পড়ে মেনন-ইনুদের। এ কারণে সবার শেষে খালেদার জন্য মোদির হাতে সময় ছিলো মাত্র দশ মিনিটের মতো। সময় পাবেন না বুঝে আগে থেকেই নিজের বক্তব্য হাতে লিখে নোট করে নিয়ে যান খালেদা। দুঃখের বিষয় সেগুলোর সবগুলো পড়েও উঠতে পারেন নি তিনি।
তবে ওই সাক্ষাতে খালেদা একজন বিদেশি সরকার প্রধানের কাছে নিজ দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে যে অভিযোগ করেছেন তাতে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু তাই নয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন সবই কুক্ষিগত করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ করেন খালেদা।
প্রতিবেদনে কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার বলেছে, খালেদা মোদির কাছে দিল্লির আগের মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধেও অনুযোগ করেছেন।
তবে তিনি নালিশ করে সুবিধা করতে পারেননি বলেও জানানো হয়। বরং মোদি উল্টো তাকে প্রশ্ন করেছেন, তিনি কেনো শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনায় বসে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করছেন না? জবাবে খালেদা বলেছেন, তিনি বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছেন, কিন্তু সরকারের আচরণে ফিরে এসেছেন।
এরপর মোদি তাকে বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এড়িয়ে অন্য কোনো পথে হাঁটার সুযোগ সংসদীয় ব্যবস্থায় নেই। এর মাধ্যমে মোদি তাকে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতেই পরামর্শ দিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
এছাড়াও বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রী ও পণ্য যোগাযোগের বিষয়টিকে সমর্থন জানিয়ে খালেদা জিয়া মোদির মন পাবার চেষ্টা করেছেন বলে মন্তব্য করে কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।