ভারতের উত্তরপ্রদেশ সরকারের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিএসএফ’র নিহত হেড কনস্টেবল প্রেমসাগরের পরিবারকে ‘অপমান’ করার অভিযোগ উঠেছে।
নিহত প্রেমসাগরের পরিবারের সঙ্গে দেওরিয়া জেলায় প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গত শুক্রবার দেখা করতে যান। আর সেই সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ‘বিশেষ’ ব্যবস্থার আয়োজন করে প্রশাসন।
এই কারণে প্রেমসাগরের বাড়িতে এসি আর চকচকে নতুন সোফাসেটের পাশাপাশি জানালায় লাগানো হয় দামী পর্দা, আর বিছানো হয় নরম কার্পেট। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর যেন কোন রকম অসুবিধা না হয়, স্থানীয় প্রশাসন সেজন্য ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাও করে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
নিহতের ভাই দয়াসাগর দ্য ওয়্যার’কে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী দেখা করে চলে যাওয়ার ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই কর্মকর্তারা ওই কার্পেট, সোফা আর এসি সহ সবকিছু খুলে নিয়ে যান। আর এতেই অপমানিত বোধ করেছেন ওই সেনার পরিবার।
দয়াশঙ্কর নিজেও বিএসএফ সদস্য। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন চাইলে দুয়েকদিন অপেক্ষা করতে পারত।
এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বিরোধী দলগুলোও।
প্রেমসাগরের ছেলে ঈশ্বর বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন। কিন্তু এ বাড়িতে তার পা রাখার দু’দিন আগে থেকেই আমাদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা।
‘আমাদের চার রুমের বাড়িতে এসে মুখ্যমন্ত্রীর আরামে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য দু’দিন আগে থেকেই এসি, কার্পেট, সোফা, এমনকি নতুন তোয়ালেরও ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তিনি বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সব খুলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
গত ১ মে জম্মু-কাশ্মিরের পুঞ্চ এলাকায় টহলরত অবস্থায় নিহত হন প্রেমসাগর। পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিম (ব্যাট) ওইদিন এলওসি (লাইন অব কন্ট্রোল) অঞ্চল দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে পড়ে প্রেমসাগর এবং বিএসএফ নায়েক সুবেদার পরমজিৎ সিংকে হত্যা করে বলে অভিযোগ ভারতের। তাদের হত্যা করে মৃতদেহ বিকৃতও কর হয়।
এ খবর জানার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিল পুরো দেওরিয়া গ্রাম। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ দাবির পাশাপাশি প্রেমসাগরের পরিবারের দাবি ছিল, মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ দেখা না করা পর্যন্ত তার শেষকৃত্য করা হবে না।
পরে আদিত্যনাথ তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে দেখা করার আশ্বাস দেন। ওই কথা রাখতেই শুক্রবার প্রেমসাগরের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন যোগী আদিত্যনাথ।
নিহত প্রেমসাগরের পরিবারকে সব ধরণের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী।