অবশেষে আলোর মুখ দেখছে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো। দীর্ঘদিন পর সবাই তাদের বদ্ধ রুদ্ধ জীবন থেকে এক ধরণের মুক্তি পাবে। করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে এমনটাই জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা।
করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ছুটি আর বাড়ছে না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৈঠক শেষে রাত পৌনে ১২টায় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ শনাক্ত থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। ধীরে ধীরে করোনার টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সাপেক্ষে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।
চ্যানেল আইয়ের এক সংবাদে জানা গেছে, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার ব্যাপারে জাতীয় পরামর্শক কমিটি ইতিবাচক পরামর্শ দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯–এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮ আগস্ট সচিব সভায় করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং টিকা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আমরা আশা করবো সরকারের এই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্থবির জীবনে প্রাণের স্পন্দন আনবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের এত দীর্ঘ ইতিহাস বিদ্যমান সভ্যতায় নজীরবিহীন। দেশের আগামী প্রজন্ম আশা করি তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে। আবারও মুখরিত হবে দেশের জ্ঞান অর্জনের প্রতিষ্ঠানগুলো। আমরা একই সঙ্গে আশা করি সরকার স্বাস্থ্যবিধিও সঠিকভাবে পালন করতে নির্দেশ দিবে সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে।