১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে যশোর সীমান্তবর্তী গ্রামে লড়াই করে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনারা। তারই প্রেক্ষাপটে বলিউডে নির্মিত হচ্ছে সিনেমা ‘পিপ্পা’। এতে ভারতীয় সেনা অফিসার ব্রিগেডিয়ার বলরাম সিং মেহতার চরিত্রে থাকছেন ঈশান খাট্টার।
এই সিনেমার শুটিং চলছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের কালিকাপুর আদুরিয়ার জঙ্গলে। শুটিং চলছে পুরোদমে। হালকা ঝিরঝিরে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গভীর অরণ্যভূমির ভিতর, লাল মোরামের রাস্তায় ‘পিপ্পা’র শুটিং এ ব্যস্ত বলিউড অভিনেতারা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শনিবার ও রবিবার চলবে শুটিং। পরিচালক রাজাকৃষ্ণ মেননের এই ছবিতে ঈশান খাট্টার ছাড়াও আরো অভিনয় করছেন ম্রুনাল ঠাকুর, প্রিয়াংশু এবং সনি রাজদান প্রমুখ।
আউশগ্রামের এই জঙ্গলে শনিবার একদল আর্মি অফিসারের দলে, আর্মি অফিসারের পোষাকে দেখা যায় বলিউড অভিনেতা ঈশান খাট্টারকে। আদুরিয়ার ক্যানেল পাড়ের জঙ্গলের লাল মোরামের রাস্তায়, কয়েকটি যুদ্ধের সাঁজোয়া গাড়ি, যুদ্ধের গাড়ি এবং কামান নিয়ে ছবির শুটিং চলছে দিনভর।
পরিচালক রাজাকৃষ্ণ মেনন বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কাহিনি নিয়ে নির্মিত হবে সিনেমাটি।’ এটুকুর বাইরে আর কোনো তথ্য দিতে চাইলেন না এই নির্মাতা। পরিচালকের মতো ছবিটি প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাইলেন না অভিনেতা ঈশান খাট্টারও। শুধু বলেন, ‘এমন জঙ্গলে অভিনয় করার অভিজ্ঞাতাই আলাদা।’
মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির প্রযোজক সিদ্ধার্থ রায় কাপুর ‘পিপ্পা’ ছবির প্রযোজক। ‘পিপ্পা’ কেন ছবির নাম? কেউ সে ভাবে তেমন কিছু বলতে না চাইলেও, যুদ্ধের রাশিয়ান কামানের নাম ছিল ‘পিপ্পা’। তাহলে, এই নামেই কি তবে সিনেমার নাম?
আউশগ্রামের এই জঙ্গল ও জঙ্গল লাগোয়া কালিকাপুরের সাত মহলা রাজবাড়ি আজ পর্যন্ত মৃণাল সেনের ‘খণ্ডহর’, ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘আরও একটি প্রেমের গল্প’ ও অপর্ণা সেনের ‘গয়নার বাক্স’ সহ ২৪৮ টি ছবির শুটিং হয়েছে। সুজয় ঘোষের ‘তিন’ ছবির জন্য এই জঙ্গলে শুটিং করতে এসেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকী সহ আরও অনেকে।
এরআগে এই ছবির শুটিং হয়েছে দুর্গাপুরে। তবে এই বৃষ্টি ভেজা আবহাওয়ায় ‘পিপ্পা’ ছবির শুটিং চলছে। এমন প্রতিকূল পরিবেশে শুটিং করাটাও এক যুদ্ধ জয়ের মতো। স্থানীয় অভিনেতা পিগলু চক্রবর্তী বলেন, ‘সত্যিই কষ্ট হচ্ছে, এমন বৃষ্টিকে মাথায় নিয়ে শুটিং করা দেখে।’
১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর ৪৫ ক্যাভলরির ১৪ পিটি-৭৬ ট্যাংকের একটি স্কোয়াড্রনের সাহায্যে ১৪ পাঞ্জাব ব্যাটালিয়ন গরিবপুরের পাকিস্তানি দুর্গের ভেতর প্রবেশ করে। ১০৭ পাক পদাতিক ব্রিগেড তাৎক্ষণিকভাবে এই আক্রমণ প্রতিহত করে। কিন্তু মিত্রবাহিনীর আগ্রাসী মনোভাবের সঙ্গে বেশিক্ষণ পাল্লা দিতে পারেনি পাকিস্তানি সৈন্যরা। কুয়াশার সাহায্য নিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাক বাহিনীর শিবির ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
ছবি: রাধামাধব মণ্ডল