নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। এদিন বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাঙালি জাতি। বিজয়ের ৪৮ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ‘৩১ তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন’-এর উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্প নির্ভর টেলিছবি ‘কাশেম ডাকাত’।
টেলিছবির মূল ভাবনায় খন্দকার লেনিন, রচনা ও চিত্রনাট্যে আছেন সাদাত রাসেল এবং পরিচালনায় রাসেল আযম। অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, সুষমা সরকার, খন্দকার লেনিন, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, সঞ্চিতা দত্ত, মুকুল সিরাজ, ফারগান মিল্টন, শিকদার মুকিত, দাঊদ নূরসহ অনেকে। আগামি ২০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) দুপুর তিনটায় চ্যানেল আইয়ে সম্প্রচার হবে টেলিছবিটি।
টেলিভিশন সম্প্রচার পূর্বে ৩১ তম বিসিএস অ্যাসোসিয়েশনস-এর পক্ষ থেকে ১৮ ডিসেম্বর (বুধবার) সন্ধ্যা ছয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট মন্ডলে টেলিছবিটির ‘প্রিমিয়ার শো’এবং সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ৩১ তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন সদস্যবৃন্দ, টেলিছবিটির সঙ্গে যুক্ত শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
১৯৭১ সালে কেশবপুর গ্রামের দুর্ধর্ষ ডাকাত কাশেম। যে অন্যের সম্পত্তি লুট করতে দুইবার চিন্তা করে না। কিন্তু হঠাৎ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সবকিছু পাল্টে যায়। যে নৌকায় করে বহর নিয়ে ডাকাতি করে বেড়ায় কাশেম, উল্টো পাকিস্তানিরা তার সেই নৌকা লুট করে নেয়। এরমধ্যে পাকিস্তানি হায়েনাদের তাড়া খেয়ে জীবন নিয়ে পালিয়ে বাঁচা কিছু সাধারণ মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ তার জীবন বোধ পাল্টে দেয়। কীভাবে ধীরে ধীরে একজন ডাকাত মুক্তিযুদ্ধে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন এবং অন্যের জন্যে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন, তাই ফুটে উঠেছে ‘কাশেম ডাকাত’ টেলিছবিতে। এমনটাই বলছিলেন নির্মাতা রাসেল আযম।
টেলিছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র কাশেম ডাকাত হিসেবে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান। টেলিছবিটি নিয়ে এই অভিনেতা বলেন, আমার অভিনয় ক্যারিয়ারে অন্যতম একটি কাজ ‘কাশেম ডাকাত’। মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর এমন গল্পে এর আগে কাজের অভিজ্ঞতা কম। অসাধারণ অনুভূতি। আশা করছি টেলিছবিটি দেখার পর দর্শকদের হৃদয় স্পর্শ করবে কাশেম ডাকাত।
টেলিছবিতে একজন মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করেছেন খন্দকার লেনিন। নিজের চরিত্র নিয়ে এই অভিনেতা জানান, যুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বলছি, এমন চরিত্রে অভিনয়ের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। বরাবরই এমন চরিত্রে কাজ করতে মুখিয়ে থাকি। ‘কাশেম ডাকাত’ টেলিছবিতে কাজ করতে পেরে সত্যিই আমি আনন্দিত। এমন উদ্যোগ নেয়ার জন্য ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনস-কে ধন্যবাদ জানাই। আশা করছি, এমন কাজ ভবিষ্যতে আরো হবে।
‘কাশেম ডাকাত’ নিয়ে ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ্ আল হাদী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে টেলিছবি ‘কাশেম ডাকাত’-এর সঙ্গে আমরা যুক্ত হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের গল্প তরুণ প্রজন্মকে জানানোর তাগিদ থেকে ভবষ্যতেও আমরা এমন কাজ বিনির্মাণ করবো। কারণ আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে মাথা উঁচু করে আমাদের বেঁচে থাকা ও বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একমাত্র অবলম্বন।