চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মীর কাসেমের আইনজীবী বললেন, ‘মাই লর্ড, আমি অসহায়’

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর
কাসেম আলীর রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) শুনানি মুলতবি করা হয়েছে। সময় চেয়ে তার পক্ষে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী রোববার শুনানির নতুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে)
সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।

বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন—বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

শুনানি শুরুর আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা মীর কাসেমের আইনজীবী খন্দকার মাহবুবের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি যে যুক্তিতে সময় চেয়েছেন, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমার ব্রাদার বিচারপতিরা এখানে আছেন। তিনি (অন্য এক বিচারপতি) সময় নির্ধারণ করেছিলেন। ওই সময় আপনি সময় চেয়েছিলেন। আমরা ছয় সপ্তাহ সময় দিয়েছি। ২৪ আগস্ট সময়ের জন্য আবেদন করেছেন। আমরা সময় দিয়েছি। অথচ রিভিউর কোনো আইন নেই। এরপরও আমরা সুযোগ দিয়েছি।’

মীর কাসেমের পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে বলেন, ‘মাই লর্ড, আমি অসহায়। সব নথি মীর কাসেম ‌আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমানের কাছে ছিল। কিন্তু তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। যে কারণে আমরা মামলার শুনানি করতে পারছি না।’

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা আলাদা একটা বিষয়। আপিল বিভাগের জাজমেন্ট তো আপনাদের কাছে আছে। আপনাদের কাছে যদি না থাকে, তাহলে আমার কাছ থেকে নিয়ে যান। আজ সাড়ে ১১টায় প্রয়োজনে শুনানির জন্য আসেন। তবু আজকেই শুরু করেন।’

এ সময় খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘রিভিউ পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। কিন্তু এটার নথি আমাদের হাতে নেই। এটা ব্যারিস্টার আরমানের কাছেই আছে। তাই শুনানি করতে পারছি না। তাই আমাদের সময় দেওয়া হোক।’

আসামিপক্ষের আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ আইনে রিভিউ আবেদনের সুযোগ না থাকলেও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সে সুযোগ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

সময় দেওয়ার বিষয়ে মৌখিকভাবে আশ্বস্ত করেন প্রধান বিচারপতি। এরপর আবেদন উপস্থাপন শুরু করেন আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী। শুনানি মুলতবি হওয়ার পর রেকর্ড রুমে গিয়ে মামলায় সময় লাগার তথ্য নিয়ে আসেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

তিনি বলেন, রিভিউ পিটিশনে সার্টিফিকেট দেন সিনিয়র আইনজীবী। আর এই মামলায় পুরো সময় শুনানি করেছেন জনাব শাহজাহান। উনি উপস্থি ছিলেন। কাজেই এখানে মীর কাসেম আলীর ছেলের অনুপস্থিতির কারণে মামলার শুনানি বন্ধ করা যায় না।

গত ১৯ জুন আপিল বিভাগের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এতে ১৪টি আইনি যুক্তি তুলে ধরে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আবেদন জানানো হয়।

জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৬ জুন প্রকাশ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোর জসিমসহ ছয়জনকে হত্যার দায়ে গত ৮ মার্চ মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখে আদেশ দেন আদালত। পরে ৭ জুন তাকে মৃত্যুপরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।