বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিন আক্রমণের সামনে বুক ফুলিয়ে সেঞ্চুরি উদযাপন করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। খানিক বাদেই সেঞ্চুরির দুয়ারে পৌঁছালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কয়েকদিন আগেই জন্ম নেয়া সন্তানকে উৎসর্গ করলেন মাইলফলক। দুই বন্ধুর জোড়া সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ব্যাটিংস্বর্গে এশিয়া কাপে টিকে থাকার ম্যাচে সাকিব আল হাসানের দল ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৩৩৪ রান। ১১৯ বলে ৭টি চার ও ৩ ছয়ে ১১২ রান করে চোট নিয়ে ফেরেন মিরাজ। কাভারের উপর দিয়ে কব্জি ঘোরানো ছয় হাঁকাতে গিয়ে বাঁ-হাতের আঙুল মচকে যায় এ অলরাউন্ডারের। বল সীমানাছাড়া হয় ঠিকই, তবে ব্যথা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মিরাজকে। ডানহাতি বোলার হওয়ায় বল হাতে নিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয় তার।
শান্ত ১০৫ বলে ৯টি চার ও ২ ছয়ে ১০৪ রান করেন। তারও দুর্ভাগ্য, হতে হয় রান আউট। তৃতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের নতুন রেকর্ড হয়নি অল্পের জন্য। দুইশর কাছে গিয়ে ১৯৪ রানে বিচ্ছিন্ন হন মিরাজ-শান্ত। ওয়ানডেতে তৃতীয় উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান আফগানদের বিপক্ষেই। গতবছর চট্টগ্রামে ২০২ রানের জুটি গড়েছিলেন লিটন দাস মুশফিকুর রহিম।
মুখোমুখি দেখায় আফগানদের বিপক্ষে আগের ১৫ ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ৩০৬ রান। সেটি ছাড়িয়ে যায় সহজেই। মুশফিক ১৫ বলে ২৫ রান করে হন রান আউট। ৬ বলে ১১ করে রান আউট হন অভিষিক্ত শামীম হোসেন পাটোয়ারী। সাকিব আল হাসান ১৮ বলে ৩২ ও আফিফ হোসেন ৩ বলে ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
ওপেনিং নিয়ে যতবারই সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ, সমাধান হয়ে এসেছেন মিরাজ। এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে আরও একবার ওপেনারের ভূমিকায় অবতীর্ণ তিনি। তাতে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পেল বাংলাদেশ।
১০ ইনিংস আগে ভারতের বিপক্ষে মিরাজ মিরপুরে সেঞ্চুরি করেছিলেন আট নম্বরে নেমে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়টি করলেন ওপেনিংয়ে নেমে।
২০১৮ সালের এশিয়া কাপে প্রথমবার ওপেনিং করেছিলেন মিরাজ। বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির দুর্দশা কাটান ৩২ রানের ইনিংস খেলে। প্রথম পরীক্ষাতেই ভালোভাবে উত্তীর্ণ মিরাজ এশিয়া কাপকে বানালেন আরেকটি সেঞ্চুরির মঞ্চ।
নাঈম শেখের সঙ্গে ৬০ রানের ওপেনিং জুটি হয় মিরাজের। নাঈম ও তাওহিদ হৃদয় পরপর দুই ওভারে আউট হলে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। মিরাজ-শান্ত বড় জুটি গড়ে বাংলাদেশকে নিয়ে যায় রেকর্ড সংগ্রহে।
রদবদলের ওপেনিং জুটিতে নাঈম শেখের সঙ্গী হন মিরাজ। তারা প্রথম তিন ওভারেই তুলে নেন ৩০ রান। নতুন জুটির রসায়নটা খারাপ হয়নি। একপ্রান্ত ধরে রাখেন মিরাজ। অন্যপ্রান্তে আগ্রাসী ভূমিকায় থাকেন নাঈম। ২৮ রান করে ফেরেন এ বাঁহাতি। পরের ওভারে তাওহিদ হৃদয় রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন সাজঘরে।