চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার বিষয়ে রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেছেন, ওই ঘটনায় এমন দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা সরাসরি জড়িত ছিল।
“তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরো কিছু মানুষকে ধরার প্রক্রিয়া চলছে। সেটা সম্পন্ন হলেই সবার সামনে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সবকিছু জানানো হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে আপাতত আর কিছু বলা সম্ভব নয়।”
আটক হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে সংবাদকর্মীদের বেশি তথ্য প্রকাশ না করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আটককৃতরা আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে যে তারাই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। এতে ৭ থেকে ৮ জন অংশ নিয়েছে। এখন অন্যেদের ধরার প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার পুরো তদন্ত সম্পন্ন করার পর দেশের জনগণকে জানানো হবে।
সিএমপি কমিশনার জানান, আটক দুইজনের মধ্যে একজনের নাম ওয়াসিম। যে মোটর সাইকেলে ছিল এবং মিতুকে গুলি করেছে।
অারেকজনের নাম আনোয়ার। সে ঘটনাস্থলে রেকি করার পাশাপাশি ব্যাক-আপ হিসেবে কাজ করেছে।
স্ত্রী হত্যা মামলার বাদী এসপি বাবুল আক্তারকে ঢাকার ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ১৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর থেকেই ছিলো নানামুখি প্রশ্ন। এই ঘটনায় দুইজন ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি জানিয়ে ইকবাল বাহার বলেন, তথ্যের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনেককে ডাকা হয়েছে তবে সেসব গ্রেপ্তার নয়। বাদীর সঙ্গে মামলা নিয়ে দীর্ঘসময় আলোচনা হতে পারে সেটাকে জিজ্ঞাসাবাদ বলার সুযোগ নেই। বাদীকে নজরদারীতে রাখারও কিছু নেই। তদন্তে যদি ভিন্নরকম কিছু বেরিয়ে আসে তাহলে সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে, সেখানে লুকোচুরির কিছু নেই।
পুরোপুরি তদন্ত শেষে আদালতে সোপর্দ করার পরই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন জানিয়ে সিএমপি কমিশনার বলেন, “এটা নিশ্চিত যে ঘটনাটা টার্গেট কিলিং। তবে কারা এটা ঘটিয়েছে তা তদন্ত শেষে জানানো হবে।”
হত্যাকাণ্ডের পর ‘জঙ্গিরা জড়িত’ সিএমপি কমিশনারের এমন বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “আমি কোনো অবস্থান থেকে সরে আসছি না বা কোনো অবস্থানেও থাকছি না। সব অপশন খোলা রেখেই আমরা তদন্ত করছি।”
গত ৫ জুন চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে শিশু সন্তানের সামনে কুপিয়ে ও গুলি করে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করা হয়।
পরের দিন ভোরে নগরীর বাদুরতলা বড় গ্যারেজ এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পর পুলিশ দাবি করে বাবুল আক্তারের জঙ্গিবিরোধী ভূমিকার কারণেই তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সারাদেশে শুরু হয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হয় কমপক্ষে ৬ জঙ্গি।