বাংলা চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট অভিনেতা মিজু আহমেদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার (২৭ মার্চ)। ২০১৭ সালের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
একটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে দিনাজপুর যাওয়ার পথে ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশনে পার হওয়ার সময় ট্রেনে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তখনই তাকে স্থানীয় কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মিজু আহমেদের মরদেহ কুষ্টিয়া জেলার কোর্টপাড়া পৌর এলাকায় দাফন করা হয়।
মিজু আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মরণে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেছেন শিল্পী সমিতি। সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইমন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বাদ আসর তার (মিজু আহমেদ) স্মরণে শিল্পী সমিতির দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।
মিজু আহমেদ মূলত খল অভিনেতা হিসেবে বাংলা চলচ্চিত্রে বেশি পরিচিত। তবে একজন প্রযোজক হিসেবেও ঢালিউডপাড়ায় পরিচিতি আছে তার। তিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতিও ছিলেন।
১৯৭৮ সালে ‘তৃষ্ণা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। কয়েক বছর পরে তিনি ঢালিউড চলচ্চিত্রশিল্পে অন্যতম সেরা একজন খলনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
এ ছাড়া মিজু আহমেদ তার নিজের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ‘ফ্রেন্ডস মুভিজ’-এর ব্যানারে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন।
মিজু আহমেদ ১৭ নভেম্বর ১৯৫৩ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আসল নাম মিজানুর রহমান। শৈশব থেকে তিনি থিয়েটারের প্রতি খুবই আগ্রহী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি কুষ্টিয়ার স্থানীয় একটি নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হন।
বড়পর্দায় এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০টি ছবি মুক্তি পেয়েছে তাঁর। তাঁর অভিনীত ছবিগুলো মধ্যে হচ্ছে ‘তৃষ্ণা’ (১৯৭৮), ‘মহানগর’ (১৯৮১), ‘স্যারেন্ডার’ (১৯৮৭), ‘চাকর’ (১৯৯২), ‘সোলেমান ডাঙ্গা’ (১৯৯২), ‘ত্যাগ’ (১৯৯৩), ‘বশিরা’ (১৯৯৬), ‘আজকের সন্ত্রাসী’ (১৯৯৬), ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’ (১৯৯৭), ‘কুলি’ (১৯৯৭), ‘লাঠি’ (১৯৯৯), ‘লাল বাদশা’ (১৯৯৯), ‘গুন্ডা নাম্বার ওয়ান’ (২০০০), ‘ঝড়’ (২০০০), ‘কষ্ট’ (২০০০), ‘ওদের ধর’ (২০০২), ‘ইতিহাস’ (২০০২), ‘ভাইয়া’ (২০০২), ‘হিংসা প্রতিহিংসা’ (২০০৩), ‘বিগ বস’ (২০০৩), ‘আজকের সমাজ’ (২০০৪), ‘মহিলা হোস্টেল’ (২০০৪), ‘ভণ্ড ওঝা’ (২০০৬) ইত্যাদি।
‘তৃষ্ণা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ১৯৯২ সালে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান মিজু আহমেদ।