মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ শিশুটির বয়স আজ দশদিন। অস্ত্রোপচারের পর তাকে ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের স্পেশাল কেয়ার অব বেবি ইউনিট বা স্ক্যাবো-তে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা এখন স্থিতিশীল তবে এখনি নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
শিশুটির গুলিবিদ্ধ আহত মা নাজমা বেগম ভর্তি আছেন একই হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে। সময়ের আগে জন্ম নেয়া বুলেট বিদ্ধ, জন্ডিসে আক্রান্ত এবং মাতৃদুগ্ধ বঞ্চিত দুর্বল শিশুটিকে বিকল্প উপায়ে তার মায়ের দুধ পান করানো হয়েছে। এই শিশুটির জন্ম জীবন বিস্ময়কর ঘটনা ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। আজ বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ দিবস, আজই সে জন্মের পর প্রথম মায়ের দুধ পান করতে পারলো।
বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটিকে স্ক্যাবো-তে পাঠানোর পর ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকরা। আজ শনিবার শিশুটির শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা সম্পর্কে ঢামেক এর সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. খাজা আব্দুল গফুর চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ওর অবস্থা আগের মতোই অর্থাৎ স্থিতিশীল আছে। তবে প্রি-ম্যাচিউর শিশুটি গুলিতে জখম এবং জন্ডিস আক্রান্ত হওয়ায় এখনো তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বিকল্প উপায়ে ওর মায়ের দুধ সংগ্রহ করে শিশুটিকে পান করানো হয়েছে। শিশুটির জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব প্রাপ্ত নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা জানান, ঢামেক-এ শিশুটির জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবজাতক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
গুলির আঘাতে শিশুটির ক্ষতিগ্রস্থ ডান চোখ নিয়ে চিকিৎসকরা শঙ্কিত আর হাতের কবজিতেও জখম রয়েছে তার। স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিট বা স্ক্যাবো-তে স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজনের এই শিশুটি নিবিড় পরিচর্যায়। অন্যসব জটিলতার সাথে জন্ডিসের জন্য চলছে ফটো থেরাপি। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় আসা শিশুটির গুলিবিদ্ধ মায়ের চিকিৎসাও হচ্ছে ঢামেক- এ। সামান্য শ্বাস কষ্টেও ভুগছেন তিনি।
মাগুরার দোয়ারপাড়ায় গত ২৩ জুলাই যুবলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হন আট মাসের অন্তসত্বা নাজমা বেগম। সেদিন রাতেই তার জীবন বাঁচাতে অস্ত্রোপচার করে অপরিণত কন্যা সন্তানকে ভূমিষ্ঠ করানো হয়। এর একদিন পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন স্বজনরা। প্রথম কয়েকদিন বাবা-মা কাছে না থাকলেও এখন সন্তানের সুস্থতার সংবাদ শুনতে হাসপাতালে অপেক্ষায় আছেন মা নাজমা ও বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া।