রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ এবং তাদের নাগরিক ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে নেওয়াসহ চার দফা দাবিতে মায়ানমার দূতাবাসে স্মারকলিপি দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
সোমবার বিকেলে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে মঞ্চের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল মায়ানমার দূতাবাসে এ স্মারকলিপি দেয়।
এছাড়া আরাকান রাজ্যে নির্বিচারে রোহিঙ্গা নিধনের প্রতিবাদে বাংলাদেশের জনগনকে সব ধরণের বার্মিজ পন্য বর্জনের ডাক দেন ডা. ইমরান এইচ সরকার। একই সঙ্গে মায়ানমার থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত বাতিলসহ দেশটির সঙ্গে সব ধরণের বানিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
‘চলমান গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মায়ানমার সরকারের প্রতি জরুরি স্মারকলিপি’ শিরোনামে ইংরেজিতে লেখা এ স্মারকলিপিতে চারটি দাবি জানানো হয় মায়ানমমার সরকারের প্রতি। দাবিগুলো হচ্ছে ১. অবিলম্বে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধ, ২. ১৯৮২ সালে প্রণীত মায়ানমারের নাগরিক আইন অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নাগরিক, মানবিক এবং জাতিগত স্বীকৃতি দান এবং তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ মৌলিক অধিকারগুলো ফিরিয়ে দেয়া, ৩. বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহন করা রোহিঙ্গাদের সম্মানের সঙ্গে এবং নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক পরিবেশ তৈরি করা এবং ৪. রোহিঙ্গাদের গণহত্যা এবং অত্যাচারের সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনা।
এর আগে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ‘রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিবাদে মায়ানমার দূতাবাস ঘেরাও’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ইমরান এইচ সরকারের নেতৃতে মঞ্চের কর্মীরা গুলশান-২ মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। এরপর তারা মায়ানমার দূতাবাসের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। তাই সমাবেশস্থলেই সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশ করে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ইমরান।
ইমরান এইচ সরকার বলেন: মায়ানমারের প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে লেগে আছে রোহিঙ্গাদের রক্ত। কারণ তারা বাংলাদেশে পণ্য বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে অস্ত্র কিনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে। তাই জনগণের প্রতি আহ্বান, আপনারা বার্মিজ পন্য বর্জন করুন।
চাল আমদানিসহ মায়ানমারের সঙ্গে সব ধরণের বানিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন: যে দেশের পণ্যের সঙ্গে মানুষের রক্তের দাগ লেগে আছে, বাংলাদেশের মানুষ সে পণ্য গ্রহন করবে না।
“জনগণ যাতে বার্মিজ পণ্য বর্জন করে এজন্য প্রয়োজনে মার্কেটে মার্কেটে এবং বাড়ি বাড়ি ঘুরে তাদের বোঝাবো” বলেন ইমরান।
সমাবেশ শেষে ইমরানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মায়ানমার দূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি দেয়। প্রতিনিধি দলের অপর সদস্যরা হলেন তাহমীন সুলতানা সাথী, জীবনানন্দ জয়ন্ত, আকরামুল হক এবং শিবলী হাসান।