ছয় ম্যাচে জয় মাত্র দুটি। শেষ ম্যাচেও মিলেছিল হার। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আরেকটি হারে কঠিন হয়ে উঠবে সামনের ম্যাচগুলোর হিসাব। খুলনার বিপক্ষে তাই জিততে মরিয়া ছিল রাজশাহী। ব্যাটে-বলে দারুণ প্রদর্শনীর পর জয়ের স্বপ্নও বুনছিলেন মুশফিকরা। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর ফিফটি আর আরিফুল হকের শেষের ঝড় সব এলোমেলো করে দিয়েছে। মিরপুরে ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর এক জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে গেল খুলনা।
মঙ্গলবার শের-ই-বাংলায় শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তোলে রাজশাহী কিংস। জবাবে ৪ বল আর ২ উইকেট অক্ষত রেখে জয়ে নোঙর ফেলে খুলনা টাইটানস।
অথচ রান তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে খুলনা। শুরুর ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে তিনজন দুইঅঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন। যার দুজন রিলি রুশো (২০) ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েট (১২) ইনিংস টানতে পারেননি।
এরপরও খুলনার আশা টিকে থাকল উইকেটে মাহমুদউল্লাহ লড়ে যাচ্ছিলেন বলে। কিন্তু অধিনায়কের নিঃসঙ্গ লড়াইটি কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমানো ইনিংস হতে বসেছিল। যা হতে দেননি আরিফুল। মাহমুদউল্লাহ ফিরেছেন ৫৬ রানে। ৮ চার ও এক ছয়ে তার ৪৪ বলের ইনিংস।
দ্রুত আরও কয়েকটি উইকেট হারিয়ে যখন চাপে খুলনা, সেখান থেকেই মঞ্চের সবটুকু আলো কেড়ে নেন আরিফুল হক। তার ১৯ বলে ৪৩ রানের ক্যামিং জয়ের নোঙরে ভেড়ায় খুলনার তরী। শেষ ওভারে ৬ বলে ৯ রান দরকার পড়ে খুলনার। ডোয়াইন স্মিথের করা ওভারের প্রথম বলে ছয় মেরে কাজটা অর্ধেক সেরে ফেলেন আরিফুল। পরের বলেই চার। সেটি নিয়ে ৪ চার ও ২ ছয়ের ইনিংস ম্যাচসেরা আরিফুলের।
রাজশাহীর হয়ে মোহাম্মদ সামি ৩টি, জেমস ফ্রাঙ্কলিন ২টি করে উইকেট নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন। দারুণ বল করা তরুণ পেসার হোসেন আলি শেষ ওভারে পিটুনি খাওয়ার আগে ৩ ওভারে ২০ রান খরচায় এক উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু নিজের শেষ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ম্যাচটাই দিয়ে দেন এই সম্ভাবনাময় তরুণ।
আগে লড়াইয়ের মঞ্চটা প্রস্তুত করে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও ডোয়াইন স্মিথ। দুজনের ঝোড়ো দুই ফিফটিতে মাহমুদউল্লাহদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় রাজশাহী।
বোলিংয়ে খুলনার শুরুটা দুর্দান্তই হয়েছিল। মুমিনুল হক (৫), বেল-ড্রুমন্ড (০) ও জাকির হাসানকে (০) দ্রুত ফিরিয়ে আলো ছড়ান আফিফ-জুনাইদরা।
সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণ করেন মুশফিক-স্মিথ। দুজনে যোগ করেন ৭৬ রান। ৬২ রানের ইনিংস খেলে স্মিথের বিদায়ে ভাঙে জুটি। ৩৬ বলের ইনিংসটি ৭ চার ও ৪ ছয়ে সাজানো।
স্মিথের বিদায়ের পর রানের গতি ধরে রাখেন মুশফিক। দলকে দেড়শর কাছাকাছি রেখে ফেরেন ৫৫ রানে। টাইগারদের টেস্ট অধিনায়কের ৩৩ বলের ইনিংসটিতে মিশে ৪ চার ও ৩ ছয়ের মার।
পরেরদিকে আর কেউ সেভাবে অবদান রাখতে পারেননি। দ্রুত কিছু উইকেট হারানোর সঙ্গে রাজশাহীর রানের চাকাও থেমে যায়। সেটাকে খানিকটা টেনে নেয় জেমস ফ্রাঙ্কলিনের ২৭ বলে অপরাজিত ২৯ রান। শেষপর্যন্ত সেটাকে যথেষ্ট প্রমাণ করতে পারলেন না রাজশাহীর বোলাররা।
কুমিল্লা ও ঢাকা পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে যথাক্রমে ১০ ও ৯ পয়েন্ট করে নিয়ে। পরের স্থানটি খুলনার, তাদের পয়েন্টও ৯, তবে রানরেটে তিনে তারা। আর ১২ ম্যাচের লিগ পর্বে নিজেদের সপ্তম ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয়ে রাজশাহী।