খুব বেশিদিন হয়নি। সদ্যগত বিপিএল শুরুর দুমাস আগে যাত্রা করে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন’। নড়াইলের মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করে সংগঠনটি। উদ্যোগটা বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার। যার হাত ধরে সোনলি সব সাফল্যে ভেসেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। ম্যাশ যেখানে হাত দেবেন, আলোর উজ্জ্বলতা তো বাড়বেই। তার মহৎ উদ্যোগের সেই পথ ধরে এলাকার মানুষের চিকিৎসা সুবিধা প্রাপ্তি সহজ করতে ফাউন্ডেশনটি পেয়েছে একটি অ্যাম্বুলেন্স।
বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময়ই কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন মাশরাফী। মঙ্গলবার দলকে চ্যাম্পিয়ন করা অধিনায়কের ফাউন্ডেশনের কাছে সেটি হস্তান্তর করে রাইডার্স কর্তৃপক্ষ।
রংপুর রাইডার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসতিয়াক সাদেক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাপারটা নিয়ে বিপিএলের শুরু থেকেই মাশরাফী আমাদের বলছিল। বিপিএল শেষ হওয়ার আগেই আমরা দেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। খেলার মাঝখানে ব্যস্ততার কারণে হস্তান্তর করিনি। এখন দিতে পেরে আমাদেরও ভাল লাগছে।’
নেতৃত্বগুণে রংপুরকে শিরোপা জিতিয়েছেন মাশরাফী। গুঞ্জন রটেছে পাঁচ কোটি টাকা দামের রেঞ্জ রোভার গাড়ি উপহার পেতে যাচ্ছেন অধিনায়ক। নিজের জন্য বিলাসী কিছুর উপর আগ্রহ নেই মাশরাফীর, সেটি সকলে ভাল করেই জানে, জানে রাইডার্স কর্তৃপক্ষও। ইসতিয়াক সাদেক জানালেন, মাশরাফীর সঙ্গে গাড়ি বা এমন কিছু নিয়ে আলোচনাই হয়নি।
‘গাড়ি বা পাঁচ কোটি টাকার রেঞ্জ রোভার নিয়ে আমাদের মধ্যে কথাই হয়নি। মাশরাফী ওরকম ব্যক্তি না যে দামী কিছু পেলে খুশি হবে। ওরকম মানসিকতার মানুষ না। সাধারণ জীবন-যাপন করতে সে পছন্দ করে। আমাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাফওয়ান সোবহান আসলে আমরা বড় একটা অনুষ্ঠান করবো এবং বোনাসের টাকা তুলে দেব।’
মাশরাফীর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে দেশের মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের অ্যাম্বুলেন্স প্রাপ্তির খবরটি। উন্নত নাগরিক সুবিধা, বিশেষায়িত শিক্ষাব্যবস্থা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিকতা ও মানবিক শিক্ষার প্রচলন, বেকারত্ব দূর করার ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন খেলাধুলার প্রশিক্ষণ প্রদান, চিত্রা নদীকে ঘিরে আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা করা, আইসিটি শহরে রূপান্তরিত করা এবং পরিবেশবান্ধব শহর গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে ফাউন্ডেশনটি।
মাশরাফী বাড়ির সামনেই নানার নামে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আতাউর রহমান ক্রিকেট একাডেমি’। এখানে নিয়মিত অনুশীলন করছেন প্রায় ১০০ তরুণ ক্রিকেটার। আরও বড় পরিসরে একাডেমি গড়ার পরিকল্পনাও আছে মাশরাফীর। সবার অংশগ্রহণে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে ভালবাসেন তিনি। একাডেমির জন্য ক্রিকেট সরঞ্জাম সংগ্রহে সাহায্য নেন সতীর্থদের কাছ থেকেও। মাশরাফীর উদ্যোগে এগিয়ে যাচ্ছে নড়াইল। অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিক। খেলার মাঠ থেকে সবকিছু বদলে দিতে চাওয়ার মন্ত্রটা টেনে নিয়ে যাচ্ছন সমাজ জীবনেও।