একদিন আগে নড়াইলে পৌঁছানোর পথে হাজারো জনতার ভালোবাসায় সিক্ত হন জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এমন ভালোবাসা পেয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমি আপনাদের সন্তান। আমার প্রতীক নৌকা। এই নৌকা প্রতীকে আপনারা আমাকে যোগ্য মনে করলে ভোট দেবেন।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বহু বিজয়ের নেতৃত্ব দেওয়া এ অধিনায়ক নড়াইলে নির্বাচনী প্রচারণার পরের দিন রোববার বললেন রাজনীতির সবচেয়ে ন্যায্য কথাটি। সেটিও ঠিক যেন তার অধিনায়কোচিত বক্তব্যই। জেলা আইনজীবীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মাশরাফী বলেছেন, ‘নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তার সমর্থকেরা শারীরিক এবং মানসিক কোনোভাবেই যেন আঘাত না পান সেদিকে খেয়াল রাখবেন, আমি নোংরামি পছন্দ করি না।’
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যখন সারাদেশ থেকে যখন একের পর এক প্রতিপক্ষের ওপর হামলা-নির্যাতনের খবর আসছে, তখন ‘রাজনীতিতে নবাগত’ মাশরাফী ভাবছেন এমন ভিন্ন কথা। মূলত গণতান্ত্রিক রাজনীতির এটিই মুখ্য বিষয়। সেখানে সম্প্রীতিই বড় বিষয়। জয়-পরাজয় থাকবে, সেটা মেনেও নিতে হবে। কিন্তু সেজন্য একপক্ষ অন্যপক্ষের ওপর হামলা-নির্যাতনের পথ বেছে নেবে, তা কাম্য নয়।
গত কয়েকবছর ধরেই আমরা দেখছি, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি সহিষ্ণুতা, শ্রদ্ধাবোধ কিংবা বোঝাপড়ার বিষয়টি হারিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন মানেই যেন একপক্ষকে অন্যপক্ষের হামলা-নির্যাতন। জনমতের বাইরে গিয়ে নানা কৌশলে নিজের জয়কে নিশ্চিত করা। প্রকৃতপক্ষে কোনোভাবেই পরাজয় মেনে নেওয়া হবে না- এমন একটা সংস্কৃতি চালু হয়েছে।
আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সেই সংস্কৃতি বন্ধ করার সময় হয়েছে। মাশরাফী যেন সেই সংস্কৃতি বন্ধের ডাক দিলেন। সাধারণ মানুষও আসলে এটাই চায়। তারা সহিংসতা, রক্তপাত কিংবা হিংসা ছড়ায়- এমন ঘটনাকে এড়িয়ে চলে। কারণ মানুষ চায় শান্তি।
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সমর্থকদের জন্য যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন, সারাদেশের প্রার্থীরাও যেন এমন দৃষ্টান্ত রাখেন; সেটাই আমাদের চাওয়া।