ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে কথিত `অসৌজন্যমূলক‘ আচরণের জন্য বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানকে জরিমানা করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তবে, ঘটনার কেন্দ্রে থাকা ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক জস বাটলারকে শুধু সতর্ক করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
মাশরাফি এবং সাব্বিরকে তাদের ম্যাচ ফি’র ২০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার বাংলাদেশের ৩৪ রানে জেতা ম্যাচে ইংলিশ ব্যাটসম্যান জস বাটলারকে এলবিডব্লিউ করেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু অনফিল্ড আম্পায়ার প্রথমে তাকে আউট দেননি। বাংলাদেশর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পুন:বিবেচনা করার জন্য একটি রিভিউ নেন।
থার্ড আম্পায়ার যখন রিভিউ সিদ্ধান্ত দিচ্ছিলেন তখন ড্রেসিং রুম থেকে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা সিগন্যাল পেয়ে যান যে এটা আউট। বাটলারের দিকে তাকিয়ে তারা উদযাপনও শুরু করেন। সেটা ভাল লাগেনি ইংলিশ অধিনায়কের। কড়া প্রতিক্রিয়া দেখান বাটলারও। তবে আইসিসি বাটলারকে সতর্ক করলেও মাশরাফি-সাব্বিরকে জরিমানা করেছে।
আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টের ১ ধারা লঙ্ঘনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করে আইসিসি। ১ ধারার সবগুলো উপধারা লঙ্ঘন করলে ম্যাচ ফি’র ৫০ শতাংশসহ এক বা দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করার বিধান রয়েছে।
বাটলারকে ২.১.৪ ধারায় সতর্ক করার পাশাপশি বাংলাদেশের দুই খেলোয়াড়কে কোড অব কন্ডাক্টের ২.১.৭ ধারা লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা করা হয়।
কোড অব কন্ডাক্টের ২.১.৭ ধারায় একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে অসংযত ভাষা ব্যবহার, উস্কানিমূলক ও আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গির কথা বলা আছে। দুই দলের তিন খেলোয়াড়কেই এই অপরাধে শাস্তি ও সতর্ক করা হয়।
গত ২২ সেপ্টেম্বরের সংশোধিত আইসিসির ৭.৩ ধারায় এই সমস্ত অপরাধের জন্য নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত রেটিং পয়েন্ট কমানোর কথাও বলা হয়েছে। সে হিসেবে এই তিনজনের আচরণ রেকর্ড রাখা হয়েছে।
আইন সংশোধনের পর দুই প্রতিদ্বন্দ্বি অধিনায়কের এটাই প্রথম অপরাধ। আর সাব্বিরের ক্ষেত্রে এই ঘটনা দ্বিতীয়বারের মতো ঘটলো। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একইরকম ঘটনার জন্য সাব্বিরের দুই পয়েন্ট ও এই ম্যাচের জন্য এক পয়েন্ট কাটা হয়েছে।
সংশোধিত ৭.৬ ধারা অনুসারে এই তিন খেলোয়াড় যদি আগামী ২৪ মাসের মধ্যে তাদের ব্যক্তিগত পয়েন্ট থেকে চার পয়েন্ট হারান তাহলে তাদের দুই পয়েন্ট কমানোসহ পরের এক থেকে একাধিক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হবে। দুই পয়েন্ট কমার জন্য এক টেস্ট অথবা দুই ওয়ানডে নিষিদ্ধের কথাও রয়েছে এই ধারায়।
আইসিসি বিবৃতিতে জানায়, তিন খেলোয়াড়ই তাদের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন। শাস্তির পর ম্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথ বলেছেন, এজন্য আর আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন ছিল না।
তিনি বলেন, ‘বাটলারের আউটের পর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদযাপন ছিল অতিরিক্ত এবং তার বিপরীতে ছিল অনুপযুক্ত প্রতিক্রিয়া। যার জন্য আম্পায়ারকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। আমরা সব খেলায় মাঠে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে চাই, কিন্তু সেটা শুধুমাত্র সে পর্যন্ত হবে যেটা প্রতিপক্ষের জন্য অসম্মানজনক হবে না।’
তিন খেলোয়াড়ের ব্যাপারে ম্যাচ রেফারির কাছে রিপোর্ট করেছিলেন মাঠের দুই আম্পায়ার আলিম দার ও শরাফউদ্দৌলা ইবনে সৈকত, তৃতীয় আম্পয়ার মারিয়াস ইরাসমাস এবং চতুর্থ আম্পয়ার আনিসুর রহমান।