চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মার্বেল খেলা আমাদের নয়!

শৈশব, কৈশোরের সোনালী দিনগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মার্বেল খেলার কত কত রঙদার স্মৃতি। জীবনের কতটা সময় যে মার্বেল খেলার পিছনে অপব্যয় করেছি, যার প্রতিফল এখন পলে পলে ভোগ করছি, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। স্কুল থেকে ফিরে আসার পর বইপত্র কোনোক্রমে বাসায় রেখেই ছুটে যেতাম মার্বেল নিয়ে। হাফ প্যান্টের পকেট ভর্তি থাকতো মার্বেল দিয়ে। প্রতিযোগী কাউকে পেলেই হলো। খেলায় খেলায় মেতে থেকে কখন যে দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়ে যেত, টেরই পেতাম না।

এ কারণে অনাহারে, অর্ধাহারে কেটেছে কত না দিন। পিটুনিও জুটেছে ঢের। বিভিন্ন আকারের, বিভিন্ন রঙের মার্বেলগুলো ছিল জীবনের পরম এক সম্পদ। সংগ্রহে ছিল হাজার হাজার মার্বেল। হায়, কোথায় সেই মার্বেলময় দিনগুলো?

এত দিন ধারণা ছিল, মার্বেল আমাদের নিজস্ব একটি খেলা। মূলত গ্রামীণ খেলা হিসেবেই এটাকে জেনে এসেছি। এ নিয়ে খুব গর্ব ছিল। আনন্দ ছিল। কারণ, এ খেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আমিও তো একজন অংশীদার। এখন তো এ খেলাটি খুব একটা দেখা যায় না।

কিন্তু আজ সেই গর্বটুকু নির্মমভাবে ভেঙে গিয়েছে। রয়টার্স পরিবেশিত খবরে জানতে পারলাম, ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট সাসেক্সের টিনস্লে গ্রিনে কয়েক শত বছর আগে থেকে শুরু হয় মার্বেল খেলা। লোককাহিনী অনুসারে, ১৫৮৮ সাল থেকে এ স্থানে এ খেলাটি হয়ে আসছে। আর ১৯৩২ সাল থেকে প্রতি বছর আয়োজিত হচ্ছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ।

মার্বেল খেলোয়াড় হিসেবে খ্যাতি-প্রতিপত্তি নেহাত মন্দ ছিল না। খেলোয়াড়ি জীবনে জানতে পারলে এই চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে দেশের মুখ নিশ্চয়ই উজ্জ্বল করতে পারতাম! দুভার্গ্য, মার্বেল খেলার একজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে জাতি।

মার্বেল খেলার স্মৃতিময় দিনগুলো হারিয়ে ফেলার একটা কষ্ট অহরহই বুকের মধ্যে বয়ে বেড়াই। কিন্তু খেলাটি যে আমাদের নিজস্ব নয়, এটা জানার পর মনটা খুবই খারাপ হয়ে আছে। কেন যে এমন হয়?

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)