মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ল’ফার্ম নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
মঙ্গলবার ২৮ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের মাধ্যমে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। ওটাতেও অনেক প্রভিশন (বিধান) আছে। যেখানে লিগ্যাল ফোর্স (আইনি ব্যবস্থা) নেওয়ার ব্যাপার আছে। সেখানে কী কী শর্ত থাকে, সেগুলো নিয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ল’ফার্মকে হয়তো এনগেজ করার বিষয় থাকতে পারে। সেগুলো আমরা দেখছি।’
বাংলাদেশ নিরাপত্তা খাতে মার্কিন অনুদান অব্যাহত রাখার জন্য ওয়াশিংটনের প্রস্তাবে কোনও চুক্তি করবে না জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, চুক্তি না করলেও দেশের আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সম্মতি জানাবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, অতীতের ধারাবাহিকতায় আগামী দিনেও বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অনুদান অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যৎ অনুদান নিশ্চিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাব করেছে। এটি কান্ট্রি- স্পেসিফিক বা এককভাবে বাংলাদেশের জন্যই, এমন কোনো চুক্তি নয়। ওই চুক্তির যেসব শর্তাবলী রয়েছে তা বাংলাদেশের মৌলিক অবস্থানের সঙ্গে কনফ্লিক্ট করে না।
‘‘আগের অনুদানের কোনও হিসাব দিতে হবে না। তবে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ হিসাব দিতে হবে। বাংলাদেশ ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার অনুদান পেয়েছে।’’
সচিব জানান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের আইনে পরিবর্তন করেছে, তাতে বিভিন্ন দেশের কাছে তাদের দেওয়া সামরিক সহায়তার হিসাব দিতে হবে ওয়াশিংটনকে। বিষয়টি জানিয়ে চলতি মাসের শুরুতে বিভিন্ন দেশের কাছে সম্মতি চায় যুক্তরাষ্ট্র। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এর জবাব দেবার কথা।
তিনি জানান, বাংলাদেশ সম্মত, তবে কিভাবে এই হিসাব দেওয়া হবে, সেই প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ চলছে। তবে এর সঙ্গে র্যাবের ওপর সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানান সচিব।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের শর্তে সম্মত হলেও, বাংলাদেশের কোনও বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে, সে বিষয়ে আগাম আলোচনা এবং অভিযোগের উৎস জানতে চাইবে ঢাকা। সম্মতি জানানোর সময়ই এই পাল্টা শর্ত উপস্থাপন করা হবে।