কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ভাংচুরের ঘটনায় করা মামলাসহ সবগুলো মামলা আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের জন্য নতুন সময় বেঁধে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
এই সময়ের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
এর আগে গত সোমবার মামলা প্রত্যাহারে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। যার সময়সীমা শেষ হয় আজ বুধবার।
ঢাবি লাইব্রেরির সামনে বুধবার বিকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর বলেন, আমরাও চাই ভিসি স্যারের বাসায় যারা ভাংচুর চালিয়েছে তাদের প্রত্যেককের সাজা হোক।
‘কিন্তু অজ্ঞাতনামাদের নামে মামলা হলে সাধারণ শিক্ষার্থী বা যে কেউই হয়রানীর শিকার হতে পারে। তাই আমাদের দাবি, সঠিকভাবে তদন্ত করে এবং ভিডিও ফুটেজ বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্টভাবে অভিযোগ দায়ের করে মামলা করা হোক। অজ্ঞাতনামা মামলাগুলো তুলে নেওয়া হোক।’
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দ্রুত কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আন্দোলনের সমন্বয়কেরা প্রাণনাশসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি পাচ্ছেন অভিযোগ করে সরকারের কাছে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দুই যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, মুহাম্মদ রাশেদ খান প্রমুখ।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেড় মাস ধরে চলা অান্দোলনের মুখে গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরের দিন কোটা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির আগ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে ৮ এপ্রিল অহিংস ওই আন্দোলন প্রথমবারের সহিংস রূপ নেয়। কোটা সংস্কারের দাবিতে একদল শিক্ষার্থী রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে বল প্রয়োগ করে। তারপর শুরু হয় সংঘর্ষ। যা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। ব্যাপক তাণ্ডব চলে উপাচার্যের বাসভবনে।
পরেরদিন সোমবার বিকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সচিবালয়ে আলোচনায় আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা।
সেখান আলোচনার পর ১ মাসের জন্য আন্দোলন স্থগিতের কথা জানায় অান্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা। তবে সেই সিদ্ধান্ত না মেনে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় সাধারণ আন্দোলনকারীরা।
নতুন করে আন্দোলনের তীব্রতায় এক পর্যায়ে সরকার প্রধান এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দেন।